সুকান্ত সেতু

যাদবপুরের উড়ালপুলে গর্ত, ফিরে এল আতঙ্ক

সুকান্ত সেতু দিয়ে যাদবপুরের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা যে কোনও গাড়ি বা অটো চালককেই থেমে যেতে হয়। কখনও কখনও অনেক চালক গতি কমিয়ে ধীরে ধীরে এগোন। কারণ, উড়ালপুলে দীর্ঘ একটি ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’-এর উপরে ধাতব পাত উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০১:২১
Share:

এমনই হাল। বুধবার। — বিশ্বনাথ বণিক

সুকান্ত সেতু দিয়ে যাদবপুরের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা যে কোনও গাড়ি বা অটো চালককেই থেমে যেতে হয়। কখনও কখনও অনেক চালক গতি কমিয়ে ধীরে ধীরে এগোন। কারণ, উড়ালপুলে দীর্ঘ একটি ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’-এর উপরে ধাতব পাত উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। আর সেখানেই মাঝেমধ্যে বসে যাচ্ছে গাড়ি বা অটোর চাকা। পোস্তার নির্মীয়মাণ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে এই সেতুর উপরে তৈরি হওয়া ফাঁক স্বাভাবিক ভাবে যাত্রীদের মধ্যে

Advertisement

তৈরি করেছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যে অনেকেই এই গর্তের ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছেন।

এই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করে রাজ্যের পূর্ত দফতর। দিন পনেরো আগেই সমস্যাটি চিহ্নিত করলেও কেন এই অংশটি সারানো হল না, তার কোনও সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। রাজ্যের পূর্ত দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ফাঁক বা গর্ত থাকা উচিত নয়। উড়ালপুলের একটি এক্সপ্যানশন জয়েন্টে ফাঁক হয়েছে। তবে উড়ালপুলের কাঠামোয় কোনও গলদ ধরা পড়েনি। তৈরি হওয়া দ্রুত এই ফাঁক সারানোর ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

ঠিক কী হয়েছে এই উড়ালপুলের?

পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকারের কথায়, যে কোনও সেতু বা উড়ালপুলের উপরে কংক্রিটের দু’টি স্ল্যাবের মধ্যে ধাতব পাত দিয়ে ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ তৈরি করা হয়। গরমে বা শীতে যাতে এই স্ল্যাব সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হতে না পারে, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা করা হয়। গ্রীষ্মকালে স্ল্যাব গরম হয়ে গিয়ে প্রসারিত হলে দু’টি স্ল্যাবের মধ্যে সংঘর্ষ হলে তা ভেঙে যেতে পারে। সেই কারণেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। সুকান্ত সেতুর উপরে এ রকমই দু’টি স্ল্যাবের মধ্যের অংশের একটি ধাতব পাত খুলে গিয়ে গর্ত হয়ে রয়েছে। ফলে অসুবিধা হচ্ছে যান চলাচলে।

সন্তোষপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত প্রামাণিক বলেন, ‘‘আমি দিনে অন্তত দু’বার করে সুকান্ত সেতু দিয়ে যাতায়াত করি। নিজে গাড়িও চালাই। এই ধরনের ফাঁক চোখে পড়ার পর থেকেই আমি আতঙ্কিত।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই অংশটি সারানোর বিষয়ে কোনও উদ্যোগ দেখিনি।’’ যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ঘটনার জেরে উড়ালপুল ভেঙে পড়ার কোনও আশঙ্কা নেই। তবে এ ভাবে পড়ে থাকলে পরবর্তী কালে সেতুর ক্ষতি হতে পারে।

১৯৯২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এই উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন। যাদবপুর থেকে সন্তোষপুর এবং গরফা যাওয়ার জন্য এই উড়ালপুল অন্যতম পথ। প্রত্যেক দিন প্রচুর লোক এবং যানবাহন এখান দিয়ে যাতায়াত করে। কয়েক বছর আগে সুকান্ত সেতুর অবস্থা খুব বেশি খারাপ হওয়ায় পূর্ত দফতর এই সেতুটি বছর তিনেক আগে
পুরোপুরি মেরামতি করে। তার পরেই ফের ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’-এর ধাতব পাত উঠে গিয়েছে। অন্য কয়েকটিতে ধাতব পাত না উঠলেও সেগুলিও ভঙ্গুর।

এই কয়েক বছরের মধ্যেই উড়ালপুলের এই অবস্থা হচ্ছে কেন?

পূর্ত দফতরের সাফাই, উড়ালপুল দিয়ে যানবাহন চলতে চলতে এই ধাতব পাতের উপরে চাপ পড়ে। তা থেকেও অনেক সময়ে এগুলি উঠে যায়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে এই ধাতব পাত উঠল কী করে? কর্তৃপক্ষ জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, উড়ালপুলের এই অংশ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সারানো হবে বলে দাবি তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement