জেট স্কি। এই ধরনের জলযান পেতে চলেছে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ।
ইংরেজি সিনেমায় হামেশাই দেখা যায়, জলপথে দুষ্কৃতীকে তাড়া করছে পুলিশ। সেই ছবি এ বার দেখা যেতে পারে কলকাতার গঙ্গাবক্ষেও। সৌজন্যে কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের ‘জেট স্কি’। লজ্ঝড়ে লঞ্চে করে নয়, নতুন এই জলযানে চেপেই টহল দেবে তারা।
কেন এই পরিকল্পনা?
কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের আওতায় এখন রয়েছে ২২ নটিক্যাল মাইল এলাকা (প্রায় ৩৫ কিলোমিটার)। এত দীর্ঘ এলাকায় টহলদারির জন্য তাদের ভরসা সাকুল্যে একটি স্পিডবোট এবং দু’টি লঞ্চ। জল পুলিশের এই লঞ্চ প্রতি দিন পরিদর্শন করে দক্ষিণে বজবজ থেকে উত্তরে কোন্নগর। যে এলাকায় রয়েছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স, কলকাতা বন্দর, বজবজ তেল শোধনাগার, তিনটি সেতু সহ প্রায় ৩৩টি ফেরিঘাট। সেগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব জল পুলিশের। এ ছাড়া গঙ্গায় চলাচলকারী সমস্ত লঞ্চ এবং জাহাজের সুরক্ষার দায়িত্বও রয়েছে ওই বাহিনীর হাতে।
২০১১ সালে কলকাতা পুলিশের এলাকা বেড়েছিল দক্ষিণ নাদিয়াল পর্যন্ত। কর্তাদের একাংশই স্বীকার করছেন, ৩৫ কিমি দীর্ঘ এলাকায় ঘনঘন নজরদারির জন্য প্রয়োজন দ্রুত গতির যান। কারণ গার্ডেনরিচ, নাদিয়াল বা বেলুড়ে নদীতে বড় বিপর্যয় ঘটলে দু’টি লঞ্চের সাহায্যে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনো সম্ভব নয়।
সে কারণে নজরদারি আরও কঠোর করতে চারটি জেট স্কি কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার জন্য প্রয়োজনীয় টেন্ডার করা হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি জেট স্কি-তে চালক ছাড়াও থাকতে পারবেন আরও দু’জন। এক পুলিশ কর্তা দাবি করেছেন, এই জলযান কেনার জন্য গঙ্গাবক্ষে এক দফা মহড়াও হয়ে গিয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, জেট স্কি কেনার পাশাপাশি টহলদারির জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে দু’টি বড় রেসকিউ বোটেরও। যা, বড় কোনও বিপর্যয় ঘটলে উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা যাবে। পুলিশের দাবি, ওই নৌকায় ১২-১৫ জন বসতে পারবেন। এখন কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী থাকে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে। জেট স্কি কেনা হলে তা সেই বাহিনীর পক্ষেও সুবিধাজনক হবে। এ ছাড়াও জেটি নেই যে সব এলাকায়, সেখানেও প্রয়োজনে দ্রুত জেট স্কি-র মাধ্যমে পৌঁছতে পারবেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশের একটি সূত্রই জানাচ্ছে, বন্দর বিভাগের বেশ কয়েকটি থানা গঙ্গার পার্শ্ববর্তী। ফলে বন্দর এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে বা অবরোধ হলে সড়কপথে নাদিয়ালের মতো সেখানেও পৌঁছনো দুষ্কর হয়ে যায় বাহিনীর পক্ষে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘সে ক্ষেত্রে পুলিশের আধিকারিক বা কর্মীরা জলপথে ওই জায়গায় দ্রুত পৌঁছতে পারবেন।’’