শিশু-মৃত্যুর ঘটনায় খুনের নালিশ মায়ের

বাঁশদ্রোণীর ঘোষপাড়ায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশে জলাধারে ডুবে শনিবার মৃত্যু হয়েছিল দুই শিশুর। সেই ঘটনায় ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন মৃত শুভ দুয়ারির মা দেবিকা দুয়ারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৫
Share:

বাঁশদ্রোণীর ঘোষপাড়ায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশে জলাধারে ডুবে শনিবার মৃত্যু হয়েছিল দুই শিশুর। সেই ঘটনায় ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন মৃত শুভ দুয়ারির মা দেবিকা দুয়ারি। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, দেবিকাদেবীর অভিযোগ জানানোর আগেই নির্মীয়মাণ বাড়িটির মালিকের বিরুদ্ধে তারাই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল। তার ভিত্তিতেই অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে শনিবার রাতে হাওড়ার রামরাজাতলা থেকে মালিক অভিজিৎ পাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

শনিবার দুপুরে খেলতে গিয়ে ঘোষপাড়ার ওই বাড়ির পাশে জলাধারে ডুবে মারা যায় এলাকারই দুই শিশু শুভ দুয়ারি ও অঙ্কিত ঘোষ। রবিবার বিকেলে কাঁটাপুকুর মর্গ থেকে দুই শিশুর দেহ আনা হয় ঘোষপাড়ার বাড়িতে আনা হয়। পরে গড়িয়া শ্মশানে সৎকার করা হয়। এ দিন বিকেলে নিজের ঘরে বসে দেবিকাদেবী বলেন, ‘‘ছেলেকে অকালে হারালাম। আমি চাই, আমার মতো অন্য কেউ যাতে কোলশূন্য না হন, সে বিষয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে নজরদারি বাড়ানো হোক। নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশে খোলা জলাধার থাকলে তার আশপাশ ঘিরে দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলের এই অবস্থার জন্য বাড়ির মালিকই দায়ী। উনি তো শুভকে একরকম খুনই করেছেন।’’ একই কথা অঙ্কিতের বাবা অজিত ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির মালিক সতর্ক হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। মালিকের কঠোর শাস্তি হোক, এটাই এখন আমি চাইছি।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস ছয়েক আগে বাঁশদ্রোণীর ঘোষপাড়ায় নির্মীয়মাণ বাড়িটির পাশে ঢাকনাহীন বিশালাকার জলাধারে আপত্তি জানিয়েছিল পুরসভার বিল্ডিং ও স্বাস্থ্য বিভাগ। মশা ঠেকাতে জলাধারের জল নিয়মিত পরিষ্কার করতে বলা হয়েছিল বাড়ির মালিক অভিজিৎবাবুকে। কিন্তু তিনি বিষয়টিকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেননি।

Advertisement

ওই বাড়ির প্রতিবেশীরা এ দিন জানান, দোতলা বাড়িটি বছর দুয়েক ধরে ধাপে ধাপে তৈরি হচ্ছে। শেষ কাজ হয়েছে সপ্তাহ দুই আগে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ‘‘দু’সপ্তাহ আগে নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও জলাধারের জল পরিষ্কার করা হয়নি। ওই জলাধারে জমা জল থেকে মশারও উপদ্রব বাড়ছে। বাড়ির মালিকের উদাসীনতার জন্যই এমন ঘটনা ঘটল।’’ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঁশদ্রোণীর ঘোষপাড়ার বাড়িটি নির্মাণে নিয়ম মানা হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নকশা অনুমোদনের পরেও বা়ড়ি নির্মাণের সময়ে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়। সেই নিয়ম মানা না হলে নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement