বিপজ্জনক: সুরক্ষা বলতে কোমরে বাঁধা দড়িটুকুই। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একটি বাড়ির গায়ে গজিয়ে ওঠা গাছ কাটা চলছে এ ভাবেই। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
পরনে না থাকে উজ্জ্বল রঙের জ্যাকেট, না থাকে মাথায় হেলমেট। অনেক ক্ষেত্রে কোমরে দড়িটুকু পর্যন্ত বাঁধা থাকে না। এমন অবস্থাতেই চারতলা বাড়ির উপর তলের ছাউনিতে (সানশেড) দাঁড়িয়ে কাজ করার সময়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম বিষ্ণু মিয়াঁ (৫৬)। বুধবার সকালের এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বেনিয়াপুকুর থানা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বেনিয়াপুকুরের ওরিয়েন্ট রো-এর একটি পুরনো বাড়ির সংস্কার হচ্ছিল। ভারা বেঁধে সেখানে কাজ করছিলেন এক ঠিকা সংস্থার কয়েক জন রাজমিস্ত্রি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ির চারতলার একটি ছাউনি আচমকা ভেঙে পড়ে। সেখানে দাঁড়িয়েই কাজ করছিলেন বিষ্ণু নামে ওই রাজমিস্ত্রি। বাড়ির বাসিন্দারাই থানায় খবর দিলে পুলিশ বিষ্ণুকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্য রাজমিস্ত্রিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, মৃত ব্যক্তি ঝড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি এ শহরে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। মৃতের পরিবারে খবর দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থার আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
যদিও একের পর এক এমন ঘটনাতেও কারও কেন হুঁশ ফেরে না, এ দিন সেই প্রশ্ন ফের উঠে আসছে। অথচ উঁচুতে কাজ করার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তায় কলকাতা পুরসভার বেশ কিছু নির্দেশাবলী রয়েছে। কিন্তু সে সব উড়িয়ে এ দিনই আবার দেখা গেল একই রকম ঝুঁকির দৃশ্য। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও একটি পুরনো বাড়ির গায়ে গজিয়ে ওঠা গাছ বিপজ্জনক ভাবে কাটতে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে। তাঁর সঙ্গেও ছিল না কোনও রকম সুরক্ষাকবচ।