ফাইল চিত্র।
পুর পরিষেবা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার কথা জানাতে নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর নাগরিকদের জানিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র। সেই নম্বরে এখন জমেছে অভিযোগের পাহাড়। অভিযোগের সংখ্যা এতটাই বেশি যে, মেয়রের অফিসের গ্রিভ্যান্স সেলের পক্ষে একা সেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই ওই নম্বরে আসা অভিযোগগুলির বিষয়ে বিভাগীয় আধিকারিকেরা খোঁজখবর নিয়ে যাতে তার সুষ্ঠু সমাধান করেন, সে জন্য সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন কলকাতার পুর কমিশনার।
পুরসভা সূত্রের খবর, বছরকয়েক আগে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান শুরুর সময় থেকেই সরাসরি মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে পুর পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারেন নাগরিকেরা। পাশাপাশি, মেয়রের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও (৯৮৩০০৩৭৪৯৩) পুর পরিষেবা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার কথা জানানো যায়। ফিরহাদ মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় বার শপথ নেওয়ার পরে ওই নম্বরে আসা অভিযোগের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অভিযোগের বিষয়গুলিও তাৎপর্যপূর্ণ। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘মেয়র চান, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে আসা প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখা হোক। যে যে বিভাগ সংক্রান্ত অভিযোগ আসবে, সেই বিভাগের পদস্থ আধিকারিকদের কাছে দ্রুত সেই অভিযোগ পাঠানো হবে। সেই সমস্যা মেটাতে তার পরে ওই আধিকারিক তাঁর কর্মীদের কাজ বণ্টন করে দেবেন।’’
পুর কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মেয়রের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানানো ব্যক্তিকে প্রথমে ফোন করে সমস্যা সম্পর্কে বিশদে জানার চেষ্টা করবেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা। সেই অনুযায়ী তার পরে সমস্যার সমাধানের পথ বার করবেন। তবে এটুকুই নয়। কাজ হয়ে গেলে অভিযোগকারীকে ফের ফোন করে জানতে হবে, সেই কাজে তিনি সন্তুষ্ট কি না। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘ধরা যাক, কোনও নাগরিক তাঁর বাড়ির আশপাশের জঞ্জাল বা নিকাশি সংক্রান্ত অভিযোগ মেয়রের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন। সেই সমস্যার সমাধান হওয়ার পরে পুনরায় সংশ্লিষ্ট পুর দফতরের কর্মীরা তাঁকে ফোন করে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এমন অভিযোগের সমাধান করতে প্রতিটি দফতরকে খাতা ব্যবহার করতে বলেছেন পুর কমিশনার, যেখানে ওই অভিযোগ সম্পর্কে পুঙ্খনাপুঙ্খ লেখা থাকবে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘অভিযোগকারীকে কখন ফোন করা হচ্ছে, তাঁর বাড়িতে কবে, কখন পুরকর্মীরা যাচ্ছেন— যাবতীয় বিষয় ভবিষ্যতের প্রামাণ্য নথি হিসেবে নোটবুকে লিখে রাখা হবে।’’
তবে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছে এই বিজ্ঞপ্তি। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ওই বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে বলেন, ‘‘এটা নিয়ে সম্প্রতি পুর অধিবেশনেও সমালোচনা করেছিলাম। মেয়রের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর জনসমক্ষে দেওয়া লোক দেখানো বিজ্ঞাপন ছাড়া কিছু নয়।’’
কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের বক্তব্য, ‘‘আগে পুরকর্মীদের নিয়মিত পেনশন চালু করুন। পুরসভার সঞ্চয় তলানিতে ঠেকেছে। এ সব গুরুতর বিষয়গুলির উপরে আগে জোর দেওয়া হোক।’’