পার্কিংয়ে হরির লুঠ

বছরের পর বছর এমনটাই চলছিল। সম্প্রতি পুরসভার ভাঁড়ারে টান পড়ায় হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙেছে পুর প্রশাসনের। এমতাবস্থায় শহর জুড়ে পার্কিংগুলিতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুরসভা।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০২:১৩
Share:

শহর জুড়ে পার্কিংগুলিতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুরসভা।

রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে পুরসভার পার্কিং লট। অনুমোদন রয়েছে ৯৫টি গাড়ি রাখার। থাকছে ১৬০টি।

Advertisement

আলিপুরে পুরসভার পার্কিং লট। পুরসভা সেখানে ১০টি গাড়ি রাখার অনুমোদন দিয়েছে। রাখা হচ্ছে ৩০টি।

তারাতলার কাছে পুরসভার আর একটি পার্কিং লটে বরাদ্দ ১৬টি গাড়ি। রাখা হচ্ছে ৪৭টি।

Advertisement

তিনটি নমুনা মাত্র। বাস্তবে টালা থেকে টালিগঞ্জ, পুরসভার মালিকানাধীন অধিকাংশ পার্কিং লটেই এ ভাবে অনুমোদনের চেয়ে অনেক বেশি গাড়ি রাখা হচ্ছে। আর ভাড়া আসছে ক’টির? রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে মিলছে ৯৫টি গাড়ি রাখার ভাড়া। আলিপুর থেকে পুরসভা পাচ্ছে ১০টি গাড়িরই ভাড়া।

বছরের পর বছর এমনটাই চলছিল। সম্প্রতি পুরসভার ভাঁড়ারে টান পড়ায় হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙেছে পুর প্রশাসনের। এমতাবস্থায় শহর জুড়ে পার্কিংগুলিতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুরসভা।

পুরসভার পার্কিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে দিনের বেলায় পার্কিং লটগুলিতে মোট ৭ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাতে আরও আড়াই হাজার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৮০০ গাড়ি রাখা হচ্ছে অনুমোদিত পার্কিং লটগুলিতে। একটি গাড়ির জন্য পুরসভাকে মাসে ভাড়া দিতে হয় ১, ২৫০ টাকা। তবে বরাদ্দের অতিরিক্ত গাড়ি রাখার জন্য কোনও টাকা পাচ্ছে না পুরসভা।

কিন্তু এত দিন নীরব কেন ছিল পুরসভা?

পুরসভার পার্কিং বিভাগের এক আধিকারিক জানান, দিনের বেলায় রাস্তায় পার্কিংয়ের নজরদারি রাখার ভার পুলিশের উপরে। রাতে পুর প্রশাসন দেখে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যা কিছু অনিয়ম, তা হয় দিনের বেলাতেই। উদাহরণ দিয়ে ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দুই পাশ, শরৎ বসু রোডের দু’পাশ এবং কিরণশঙ্কর রায় রোডে নো পার্কিং বলে বোর্ড দেওয়া রয়েছে। তা সত্ত্বেও ওই সব রোডে গাড়ি পার্ক করা হচ্ছে।’’

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে অনেকগুলি পার্কিং লটে বরাদ্দের থেকে বেশি গাড়ি দেখা গিয়েছে। ওই সব লটে বাড়তি যতগুলি গাড়ি পাওয়া গিয়েছে, গাড়ি প্রতি মাসিক ১, ২৫০ টাকা করে বিল করা হবে। তিনি জানান, ঠিকাদারেরা মাস হিসেবে লটের জন্য যে টাকা দেন, তার সঙ্গে অতিরিক্ত ওই বিল যুক্ত করে পাঠানো হবে।

পুরসভার এক অফিসার জানিয়েছেন, একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনকেও চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে লটে বরাদ্দের বেশি গাড়ি রাখা হয়েছে কেন, তা পর্যালোচনা করে দেখা হোক। কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ অফিসারের আবার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বেআইনি পার্কিংয়ে মদত কিন্তু দিচ্ছেন পুরসভারই কেউ কেউ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement