অঙ্কন: মণীশ মৈত্র
সালোয়ার কামিজের নীচে থ্রি কোয়ার্টার জিন্স। সেই জিন্সের পকেট যে একেবারে ‘সোনার খনি’! তাঁর আগমনটা ছিল ২৪ ক্যারেট ‘হিরণ্ময়’। আক্ষরিক অর্থেই। কেউ লক্ষ না করলে নির্গমনটাও বিনা বাধায় সেরে ফেলতেন। কিন্তু শুল্ক অফিসারদের নজর যে অনেকক্ষণ ধরেই তাঁর উপরে ঘোরাফেরা করছিল, বছর চল্লিশের রেশমা চৌধুরী তা বুঝতেই পারেননি। প্রথমে জানান দিল মেটাল ডিটেক্টর। তার পরে দেহ তল্লাশি করতেই বেরিয়ে পড়ল দু’কেজিরও বেশি সোনা, যার বাজারদর ৬৪ লক্ষ টাকারও বেশি। শনিবার ভোরে এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই মহিলাকে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ককের উড়ান থেকে কলকাতায় নামেন রেশমা। পরনে সাদামাটা সালোয়ার কামিজ। সঙ্গে স্রেফ ছোট একটা হাতব্যাগ। আর কিচ্ছু নেই। আপাত ভাবে সন্দেহজনক কিছু নয়। কিন্তু শুল্ক বিভাগের পোড়খাওয়া অফিসারদের খটকা লাগে অন্য জায়গায়। যে মহিলা বিদেশ থেকে ফিরছেন, তাঁর সঙ্গে মালপত্র নেই কেন? রেশমাকে ডেকে তাঁর পাসপোর্ট দেখতে চাওয়া হয়। দেখা যায়, শুক্রবার ভোরে ব্যাঙ্কক গিয়ে শনিবারই ফিরেছেন তিনি। অর্থাৎ, মাত্র এক দিনের জন্য তাঁর এই সফর। কিন্তু কেন? যুতসই উত্তর মেলেনি রেশমার কাছে। তখন মেটাল ডিটেক্টরে পরীক্ষা হতেই জানা যায়, তাঁর শরীরে ধাতব কিছু লুকনো আছে। তার পরে মহিলা কনস্টেবল ডেকে রেশমার দেহ তল্লাশি হতেই বেরিয়ে পড়ে সোনা। দু’টি এক কেজির বার। একটি একশো গ্রামের। জেরার মুখে রেশমা জানান, ব্যাঙ্ককে তাঁর হাতে ওই সোনা তুলে দেওয়া হয়েছিল। দেওয়ার কথা ছিল কলকাতার এক জনকে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কক থেকে লুকিয়ে সোনা নিয়ে আসাটা আজকার আকছার ঘটছে। অনেকে ধরা পড়ে গ্রেফতারও হচ্ছেন। এঁদের অধিকাংশই সোনা চোরাচালানের ‘ক্যারিয়ার’। যারা নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এই কাজ করেন। কিন্তু এ দেশে, বিশেষত কলকাতায় মহিলা ‘ক্যারিয়ার’ খুবই কম দেখা যায়। রেশমার ঘটনা সে দিক থেকে বিরল।
বিমানবন্দর ও পুলিশ সূত্রের খবর, রেশমা একবালপুর এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে জেরা করে এই সোনা পাচার চক্রের আরও বড় মাথাদের সন্ধান পেতে চাইছে পুলিশ।