আবর্জনা থেকে জৈব সার তৈরির পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। তার জন্য জৈব এবং অজৈব বর্জ্য পৃথক করা প্রয়োজন। বাড়িতেই এই পৃথকীকরণের কাজটি হলে সুবিধা হয় বলে জানাচ্ছেন পুর-কর্তারা। কিন্তু বিধাননগরের বাসিন্দাদের মধ্যে এই বর্জ্য পৃথক
করার বিষয়ে সে ভাবে সচেতনতা নেই। তাই এ নিয়ে প্রচার শুরু করছে বিধাননগর পুর নিগম।
এখন একটি প্লাস্টিকে সারা দিনের আবর্জনা রেখে দেন বাসিন্দারা। সকালে পুর-কর্মীরা এসে সেই প্লাস্টিক সংগ্রহ করে নিয়ে যান। বিধাননগর পুর নিগম গঠনের পরে জঞ্জাল থেকে জৈব সার তৈরির নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে জৈব এবং অজৈব বর্জ্য প্রথম থেকেই আলাদা করা জরুরি বলে জানাচ্ছেন পুর-কর্তারা।
পুর-কর্তাদের দাবি, বাড়িগুলি থেকে জৈব এবং অজৈব বর্জ্য আলাদা না করলে পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই মানুষের সচেতনতা বাড়ানো সবার আগে প্রয়োজন বলেই মানছেন তাঁরা। বাসিন্দাদের বোঝানোর পাশাপাশি কী ভাবে জৈব ও অজৈব আবর্জনা আলাদা করতে হবে তার জন্য লিফলেটও বিলি করছে পুর নিগম।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী জৈব, শুষ্ক ও অন্যান্য বর্জ্য আলাদা করার কথা বলছে বিধাননগর পুর নিগম। জৈব বর্জ্যের মধ্যে পড়ছে শাকসব্জি, মাছের কাঁটা, মাংসের হাড়, ঝরা পাতা, খড়কুটো, পুজোর ফুল-মালা, বাগানের বর্জ্য। শুষ্ক বর্জ্যের মধ্যে পড়ছে কাচ ও প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট, টেট্রাপ্যাক, কাগজ, কাগজের কাপ-প্লেট, ধাতুর পানীয়পাত্র, নারকেলের মালা। অন্যান্য বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে ডায়াপার, ব্যান্ডেজ, রেজার, ব্লেড, রঙের কৌটো ইত্যাদি।
আবর্জনা যাতে বাড়ির বাইরে পড়ে না থাকে তার জন্য পুর নিগম ইতিমধ্যেই দিনে দু’বার বর্জ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ করতে তিন ধরনের ব্যবস্থা করতে হবে। সমস্যা সেখানেই। এ ছাড়াও রাস্তার ধারের খাবারের দোকান এবং বিধাননগর পুর নিগম এলাকার বিভিন্ন অফিসের আবর্জনা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা।
বিধাননগর পুর নিগম সূত্রের খবর, প্রতি দিন প্রায় ৪৫০ মেট্রিক টন আবর্জনা পুর-এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, চার হাজার বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি করে কম্পোজড ইউনিট তৈরি হবে।
পুর নিগমের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিপুল আবর্জনা আলাদা করা সহজ নয়। তাই শুরু থেকেই এর উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে। তার আগে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। শুরু থেকেই জৈব ও অজৈব বর্জ্য আলাদা করা প্রয়োজন। না হলে প্রকল্প ব্যর্থ হবে।’’