কিডনির অসুখ ধরতে যন্ত্রে শান পিজিতে

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কিডনি বায়োপ্সি করাতে ২০১৩ সালে ওই যন্ত্রটি কেনা হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে ওই যন্ত্র চালাতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছিল না চিকিৎসকদের। অভাব ছিল দক্ষ টেকনিশিয়ানের।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

এসএসকেএম হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।

কিডনির বায়োপ্সি করার যন্ত্র রয়েছে হাতের কাছে। তবুও প্রায় ছ’বছর ‘নিধিরাম সর্দারের’ মতোই পড়ে ছিল ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ নামে ওই যন্ত্রটি। এ বার তাতেই শান দিয়ে সরকারি হাসপাতালে প্রথম ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের সাহায্যে কিডনি বায়োপ্সির ব্যবস্থা করলেন এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কিডনি বায়োপ্সি করাতে ২০১৩ সালে ওই যন্ত্রটি কেনা হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে ওই যন্ত্র চালাতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছিল না চিকিৎসকদের। অভাব ছিল দক্ষ টেকনিশিয়ানের। বিষয়টি নিয়ে জানার পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের দুই চিকিৎসককে দিল্লির এমসে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠান এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। পরে দিল্লি পাঠানো হয় এক টেকনিশিয়ানকেও। এর পরেই যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। সম্প্রতি কিডনি বায়োপ্সির রিপোর্ট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ওই যন্ত্র।

কিডনির অসুখে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় এই যন্ত্রের গুরুত্ব কতটা?

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এত দিন কিডনি বায়োপ্সির কাজে ব্যবহার করা হত ইমিউনোফ্লুরোসেন্স এবং লাইট মাইক্রোস্কোপ। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই দুই যন্ত্র দিয়ে বায়োপ্সির রিপোর্ট তৈরি করা হলেও তা অনেক সময়েই অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছিল। কিছু কিছু রোগ তাতে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না। ফলে বাধ্য হয়ে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করানোর জন্য সেই সব নমুনা পাঠাতে হত চেন্নাইয়ে। ভিন্‌ রাজ্যে রিপোর্ট পরীক্ষার ৫০ শতাংশ খরচ বহন করত হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগ। কিন্তু বাকি দিতে হত রোগীর পরিজনদেরই। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই যন্ত্রটি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পড়ে ছিল। সেটি ব্যবহার করে রোগীদের যাতে আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া যায়, সে জন্য এই উদ্যোগ।’’

হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, এখন অতিরিক্ত ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছে ‘অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি’র সংখ্যা। প্রাথমিক স্তরে এই ধরনের কিডনির রোগ ধরতে যন্ত্রটি খুব কার্যকরী। কোষের মেমব্রেন, সাইটোপ্লাজম, ম্যাসেঞ্জিয়ার কম্পার্টমেন্ট দেখতে এই মাইক্রোস্কোপের জুড়ি মেলা ভার।

হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক ছন্দা দত্ত বলেন, ‘‘ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে কোনও রোগ সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানা যায়। এক একটি কোষের কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে, তা এই মাইক্রোস্কোপে সহজে ধরা পড়ে।’’ নেফ্রোলজি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ কিডনির অসুখগুলো নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করে। তবে এই যন্ত্রের জন্য পরিকাঠামো তৈরি এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ খরচসাপেক্ষ। দিল্লির এমসের সহযোগিতায় এসএসকেএমের রোগীরা এই সুবিধা পাচ্ছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement