প্রতীকী ছবি
কারাগৃহের ভিতরে ছোট স্টুডিয়োটি ঘিরে অনেকে নতুন পরিচয় নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। করোনা সচেতনতাতেও বার্তা দেওয়া শুরু হয়েছিল সেখান থেকে। কিন্তু সব কিছুই এখন জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, বন্দিদের লাগানো আগুনেই দমদম জেলের ভিতরে পুড়ে গিয়েছিল ছোট রেডিয়ো স্টেশনটি। সেই ‘রেডিয়ো দমদম’ আবার কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, আপাতত তা কেউই জানেন না।
ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়ায় জন্ম হয়েছিল ‘রেডিও দমদম’-এর। গানের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সখ্যতা তৈরি হয়। সেই ইতিবাচক বিষয়কে সামনে রেখেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের অন্দরে রেডিয়ো স্টেশন চালু করেছিল কারা দফতর। অভিযোগ, গত ২১ মার্চ বন্দিদের লাগানো আগুনে সেই রেডিয়ো স্টেশনটি সম্পূর্ণ ভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়।জেলের একটি ফাঁকা ঘরে কাঠ-কাচের ব্যবহারে তৈরি হয়েছিল বাংলার জেলের প্রথম রেডিয়ো স্টেশনটি। তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করে সামগ্রীও কিনেছিল কারা দফতর।
একটি এফ এম চ্যানেলের প্রধান জিমি ট্যাঙ্গরি এবং তাঁর দলের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ হয়েছিল বন্দিদের। তালিম নিয়ে ‘রেডিয়ো জকি’ হিসাবে তৈরি হচ্ছিলেন জেলের বন্দি মনুয়া মজুমদার, জিনিয়া নন্দী, পীযূষ ঘোষ, তুহিন রায়, জয়ন্ত সিংহ। দমদমে সাফল্যের পরে অন্য জেলেও রেডিয়ো স্টেশন তৈরির কথা ভাবছিল কারা দফতর। পরিকল্পনাও শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দরকারে ডাক, হাজির নিখরচায় টিঙ্কুর টোটো
কিন্তু বন্দি তাণ্ডবের আঁচ থেকে জেলের অন্য অফিসের মতো বাদ পড়েনি রেডিয়ো স্টেশনটিও। আগুনে পুড়েছে তা। মাইক্রোফোন-সহ অন্য সামগ্রী সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি কাচের টুকরো অবশ্য অবশিষ্ট রয়েছে। ঘটনার কয়েক দিন পরে পোড়া সামগ্রী সেখান থেকে সরানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও আগুনের দাগ স্পষ্ট হয়ে রয়েছে।
যাঁদের হাত ধরে ‘রেডিয়ো দমদম’ পথ চলা শুরু করেছিল, তাঁদেরই কয়েক জনের বিরুদ্ধে বন্দি বিক্ষোভে সলতে পাকানোর অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে জেলের রেডিয়ো জকি মনুয়ার জেল বদল হয়েছে।
জিনিয়ার জেল বদল না হলেও তাঁর বিরুদ্ধেও ওই দিনের ঘটনায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে পীযূষ আর জয়ন্ত ঘটনার সঙ্গে ছিল না বলে কারা দফতর সূত্রে খবর।
মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহের গোড়ায় করোনার সচেতনতার পাঠও দেওয়া হয়েছিল ‘রেডিয়ো দমদম’-এর তরফে। সেই আবহেই তিন দিনের ব্যবধানে বন্দি মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে দমদম জেল। কবে আবার এই রেডিয়ো স্টেশন চালু করা যাবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না কারা-কর্তারা। এক কর্তার কথায়, ‘‘জেলের কর্মী-আধিকারিকেরাই ঠিক মতো অফিস করার সুযোগ পাচ্ছেন না। আগে সেই সব ঘর ঠিক করতে হবে। সেগুলি কবে হবে তা বলাই মুশকিল। বাকিগুলি নিয়ে এখনই বলার জায়গা তৈরি হয়নি।’’
আরও পড়ুন: রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত পিপিই, পড়ে রইল ৭ ঘণ্টা, আতঙ্ক গরফায়
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)