আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অভিজিৎ সিংহের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করল তাঁর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে টালা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন অভিজিতের বাবা উমেশ্বর সিংহ। সোমবারই এই ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি তাঁদের রিপোর্ট জমা দেবে হস্টেল কমিটিকে। হস্টেল কমিটি আবার সেই রিপোর্ট পেশ করবে আর জি করের অধ্যক্ষের কাছে। অভিজিতের পরিবার অবশ্য তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি-কে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল।
মঙ্গলবার অভিজিতের নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গটি বিধানসভায় তুলেছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। বিধানসভার উল্লেখপর্বে তিনি অভিযোগ করেন, নিখোঁজ হওয়ার পরে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ওই ছাত্র সম্পর্কে স্বাস্থ্য দফতর বা পুলিশ কোনও তথ্য দিতে পারছে না। তাঁর দাবি, চলতি অধিবেশনেই রাজ্য সরকার এ সম্পর্কে বিবৃতি দিক।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার বিকেলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ললিত মেমোরিয়াল ছাত্রাবাস থেকে নিজের মোবাইল ফোন রেখে নিখোঁজ হয়ে যান বিহারের মুজফ্ফরপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ। ছেলের নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে সোমবারই কলকাতায় চলে আসেন তাঁর বাবা উমেশ্বরবাবু। মঙ্গলবার তিনি কলকাতা পুলিশের কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের কাছে পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে কলকাতার কয়েকটি মর্গেও যান উমেশ্বরবাবু। এর পরেই টালা থানায় গিয়ে অপহরণের অভিযোগ দায়ের অভিজিতের বাবা।
অভিজিতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় কারা জড়িত, তা তাঁরা জানেন না। নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন, অর্থাৎ শুক্রবারও ফোনে বাড়ির সঙ্গে ওই ছাত্রের কথা হয়েছে। পরিবারের দাবি, ভাল ছাত্র হওয়ায় পড়াশোনা নিয়ে কোনও চিন্তাই ছিল না অভিজিতের। কোনও রকম মানসিক অবসাদের কথাও উড়িয়ে দিয়েছে ওই ছাত্রের পরিবার।
পুলিশ সূত্রের খবর, ছাত্রাবাসে অভিজিতের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটি খতিয়ে দেখেছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, ফোনের কললিস্ট এবং মেসেজ শনিবার মুছে দেওয়া হয়েছে। এমনকী অভিজিতের ‘হোয়াটস অ্যাপ’-এও কোনও মেসেজ ছিল না বলে তদন্তকারীরা জানান। গোয়েন্দাদের দাবি, কয়েক দিন আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিও বন্ধ করে দিয়েছিলেন অভিজিৎ। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, নিখোঁজ হওয়ার আগে ওই ছাত্র কাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।