ব্রিটিশ আমলে কয়লার ইঞ্জিন দিয়ে শুরু হয়েছিল। মাটির রাস্তা দিয়ে সেই বাস চলত ঢিমে গতিতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে বাসের যন্ত্র থেকে অবয়ব। মাটির রাস্তা পরিবর্তিত হয়েছে আধুনিক ম্যাস্টিক অ্যাসফল্টের রাস্তায়। কিন্তু গত ১০০ বছরে পাল্টায়নি, এমনকি বন্ধও হয়নি এই বাস রুট। হাওড়ার রামরাজাতলা থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত এই রুটের পোষাকি নম্বর ৫২। রুটের শতবর্ষ উপলক্ষে রবিবার বাসস্ট্যান্ডে কেক কাটলেন বাসমালিক, চালক ও কন্ডাক্টরেরা। বাসস্ট্যান্ড সাজানো হল বেলুন ও প্ল্যাকার্ড দিয়ে।
৫২ নম্বর রুটের বাসমালিকেরা জানান, স্বাধীনতার আগেই এই রুটে বাস চলাচলের অনুমোদন দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। প্রথমে কয়লার ইঞ্জিনের সাহায্যে বাস চালানো শুরু হয়। ইতিহাস ঘেঁটে তাঁরা আরও জানালেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এই রুটে ৪২টি বাস চলত। এখন সেই সংখ্যা এসে ২৯টিতে ঠেকেছে।
ব্রিটিশ আমলে প্রথমে ৫২ নম্বর বাস চলত রামরাজাতলা থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত। ১৯৮০ সালে সেই রুট সম্প্রসারিত হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত করা হয়। পরবর্তী কালে এই রুটের আরও বিস্তৃতি ঘটে। এক দিকে খটিরবাজার থেকে হাওড়া স্টেশন, অন্য দিকে ইছাপুর থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত চলাচল শুরু করে ৫২ নম্বর বাস। ১৯৮৫ সাল থেকে মধ্য হাওড়ার সুরকিকল থেকে ধর্মতলা এবং চ্যাটার্জিহাট-ধর্মতলা রুটে শুরু হয় পরিষেবা।
আগে রামরাজাতলার রামরাজা মন্দিরের সামনে কার্যত ঘিঞ্জি এলাকায় ছিল ৫২ নম্বর বাসের স্ট্যান্ড। ২০১১ সালে সেই ঐতিহাসিক বাসস্ট্যান্ড তুলে নিয়ে আসা হয় কিছুটা দূরে রামরাজাতলা বাজারে। বিধায়ক ও সাংসদ তহবিলের টাকায় তৈরি হয় নতুন সেই বাসস্ট্যান্ডটি।
৫২ নম্বর রুটের বাসমালিক সমিতির সম্পাদক ভোলানাথচৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাচীন এই বাস রুটে যাত্রী কমে যাওয়ায় রুটটি কার্যত ধুঁকছে। মালিকদের প্রভূত লোকসান হওয়ায় অনেকেই বাস তুলে নিচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, আধুনিক মানের বাসস্ট্যান্ড তৈরি করে ঐতিহ্যশালী এই রুটটি যাতে আগের মতোই চলতে পারে, সে দিকে নজর দিক রাজ্য পরিবহণ দফতর।