ফাইল চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতিতে বাস-মিনিবাসের যাত্রী-সংখ্যা প্রায় তলানিতে। গত ১৫ দিনে কলকাতায় বাসযাত্রী কমেছে ৪০-৫০ শতাংশ। আর দূরপাল্লার বাসে ৩০-৩৫ শতাংশ। যাত্রী কমে যাওয়ায় অধিকাংশ রুটেই সব বাস একসঙ্গে পথে নামছে না। সংক্রমণ বাড়লে যাত্রী আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা বাসমালিক সংগঠনগুলির। তাই রাজ্য সরকারের কাছে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছে তারা।
পরিবহণ শিল্পে সঙ্কট কাটাতে একাধিক দাবি সম্বলিত একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’। তাদের বক্তব্য, অতিমারিতে গত প্রায় দু’বছর ধরে বেসরকারি বাস, মিনিবাস রাস্তায় সে ভাবে নামতে পারেনি। এর মধ্যে আবার চলতি বছরে বহু বাসের বয়স ১৫ বছর পেরিয়ে যাবে। তাই কেন্দ্রের আইন অনুযায়ী সেগুলি বাতিল হওয়ার কথা।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, আগের দু’টি অর্থবর্ষে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস-সহ বাণিজ্যিক যানবাহনের ক্ষেত্রে একাধিক করে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ বারও পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। আর্থিক ছাড়ের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।’’
বাসমালিকদের বক্তব্য, এমনিতেই বাস না চলায় অনেকে ব্যাঙ্কের ঋণের কিস্তি সময় মতো দিতে পারেননি। এখন পুরনো বাস বাতিল করে নতুন বাস কিনতে গেলে যে বিপুল আর্থিক দায় ঘাড়ে চাপবে, তা বহনের মতো অবস্থা তাঁদের নেই। এই সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের দাবি তুলেছেন বাসমালিকেরা। সেই সঙ্গে লোকসানের বোঝা সামাল দিতে আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি বাসের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র নেওয়ার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আর্থিক ক্ষতি সামাল দিতে ভাড়ার পুনর্বিন্যাস ছাড়াও সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। না-হলে পরিবহণ শিল্পকে রক্ষা করা মুশকিল।’’ রাস্তায় পুলিশের বিপুল হারে জরিমানা আদায় নিয়েও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। বাসের সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’। সংগঠনের তরফে বাসের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্রের ক্ষেত্রে সর্বাধিক জরিমানা ১৫০০ টাকার মধ্যে রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। সিএনজি বাস কিনলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অনুদানের দাবিও জানিয়েছে ওই সংগঠন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘বাসমালিকেরা চরম সঙ্কটে। অনেক বাসই চলতি বছরে বাতিল হবে। সরকার সাহায্য না করলে এই সঙ্কট সামাল দেওয়া মুশকিল।’’