Sukanta Majumdar

BJP’s Sukanta detained: হাজরার বিক্ষোভ থেকে মমতার বাড়ির পথে এগিয়ে আটক সুকান্ত, অক্সিজেন পেল বিজেপি?

দুপুরে হাজরা মোড় এলাকা থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। বিকেলে তাঁকে ছাড়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২২ ১৮:৫১
Share:

হাজরায় আটক সুকান্ত। নিজস্ব চিত্র।

হাজরা মোড় থেকে ‘বিনা অনুমতি’-তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে এগোতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার সকালে ওই ঘটনা ঘটেছে। সুকান্তকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যায় কলকাতা পুলিশ। বিকেলের পর তাঁকে ছাড়া হয়। ততক্ষণে সেখানে জমায়েত হয়েছে বিজেপি কর্মীদের। তাঁরা সুকান্তের গলায় মালা পরিয়ে, তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকেন। তখন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের একপ্রস্ত ধস্তাধস্তিও হয়।

Advertisement

লালবাজার থেকে বেরিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘এই সরকারকে উৎখাত করব! গোলমালে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই (মুখ্যমন্ত্রীর) এই ভয় আমাদের ভাল লাগছে।’’

রাজ্য বিজেপি মনে করছে, বিক্ষোভ দেখানোর সময় তাদের রাজ্য সভাপতিকে পুলিশ রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটক করায় এবং সারাদিন লালবাজারে আটকে রাখায় তারা খানিকটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছে। বস্তুত, তারা মনে করছে, সুকান্তকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করিয়ে দু’তিনদিন জেলে বা পুলিশি হেফাজতে রাখলে তারা আরও অনেক বেশি ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ পেত। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পার্থ-কাণ্ডে খানিকটা বিলম্ব করেই পথে নেমেছে বিজেপি। প্রথমদিকে তারা নেটমাধ্যমে মিম বানানো ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত ছিল। গত কয়েকদিন ধরে তারা রাস্তায় নেমেছে। শনিবার সুকান্ত সেই বিষয়টিকেই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। দলের নেতাদের একাংশের অভিমত, মমতার বইয়ের পাতা থেকেই ‘শিক্ষা’ নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন সুকান্ত। এই পরিস্থিতিতে মমতা যা করতেন, শনিবার তিনিও সেটাই করেছেন। এবং সামগ্রিক ভাবে তাঁর দল ফায়দা পেয়েছে।

Advertisement

পার্থ-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই প্রবীণ রাজনীতিক এবং অভিজ্ঞরা বলছেন, মমতা বিরোধী নেত্রী থাকলে এই পরিস্থিতিতে কী করতেন। তাঁরা প্রায় সকলেই একমত যে, মমতা গোটা রাজ্যে দক্ষযজ্ঞ বাধিয়ে দিতেন। সেই তুলনায় এখনকার বিরোধীপক্ষ তেমন কিছুই করে উঠতে পারেনি। কংগ্রেস, সিপিএম মিছিল করেছে বটে। কিন্তু যা করলে ‘নজরে’ পড়া যায়, তেমন কোনও নাটকীয় কিছু তারা করতে পারেনি। ইতিহাস বলে, উপমহাদেশের রাজনীতিতে ঝুটঝামেলা এবং জঙ্গি আন্দোলন না-করলে না-করলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা মুশকিল। মমতা নিজে ‘স্ট্রিট ফাইটার’ এবং আন্দোলনের ফসল হিসেবেই রাজ্যের রাজনীতিতে সাফল্য পেয়েছিলেন। সুকান্ত শনিবার সেই রাস্তাতেই হাঁটা শুরু করলেন। দলের আশা, সেই পথে চলেই ‘সাফল্য’ আসবে।

পুলিশ সুকান্তকে আটকাতে গিয়ে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে-থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও ‘নিগ্রহ’ করেছে বলে বিজেপির অভিযোগ। যদিও কলকাতা পুলিশ সেই অভিযোগকে আমল দেয়নি। বিজেপির দাবি, হাজরা মোড়ে সকাল থেকেই বিজেপির বিক্ষোভ চলছিল। সেখানে সুকান্তের গাড়ি এসে দাঁড়াতেই পুলিশ সেটি ঘিরে ধরে। গাড়ি থেকে নেমে সুকান্ত স্লোগান দেওয়া শুরু করতেই তাঁকে ধরে গাড়িতে তুলে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। আরও কয়েক জন বিজেপি নেতাকেও আটক করা হয়। মোট ২৮ জনকে আঠক করা হয়ে বলে খবর। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভানেত্রী সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরি এবং রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহরা। বিকেলে লালবাজার থেকে সুকান্তের সঙ্গেই মুক্তি দেওয়া হয় বাকিদের।

পুলিশের বক্তব্য, সুকান্ত-সহ বাকিরা বিনা অনুমতিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাই তাঁদের আটক করা হয়েছে। যা পুলিশ বলেনি, বিরোধীনেত্রী মমতাও এ ভাবেই ‘ব্যারিকেড ভাঙা’-র আন্দোলন-কেন্দ্রিক রাজনীতি করে ‘পরিবর্তন’ এনেছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement