ফাইল চিত্র
উত্তরের টালা সেতুর পরে এ বার দক্ষিণ শহরতলির ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি সেতুতেও যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চায় প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ওই সেতুর ঠাকুরপুকুরমুখী রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ করতে লালবাজারকে চিঠি দিয়েছে পূর্ত দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার মূল সংযোগকারী রাস্তাতেই রয়েছে ওই সেতু।
লালবাজার সূত্রের খবর, শনিবার রাত পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবার রোডের জোকার কাছে চড়িয়াল খালের ওই অংশে যান চলাচলের উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তবে আগামী সপ্তাহ থেকেই ওই সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে পূর্ত দফতরের সুপারিশ মেনে শুধুমাত্র আট টনের কম ছোট গাড়ি চলাচলের বিষয়ে নির্দেশ জারি হতে পারে। ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, সেতুর যে অংশটি মেরামতির প্রয়োজন, সেটি অনেক পুরনো। পাশের বিষ্ণুপুরের দিকের অংশটি নতুন। ফলে সেতুর ঠাকুরপুকুরমুখী রাস্তার ওই অংশ বন্ধ করা হলে পাশের সেতু দিয়ে দু’দিকের গাড়ি চালিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া যাবে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, পূর্ত দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে পরিদর্শন এবং বৈঠকের পরেই সব চূড়ান্ত হবে।
সেতু বন্ধের পর্বের মধ্যেই পুজোর আগে শহরের যানজট সামলাতে আগামী কাল, সোমবার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে করুণাময়ী সিরিটি শ্মশানের কাছে টালি নালার উপরে নবনির্মিত সেতু এবং উত্তর শহরতলিতে কেষ্টপুর খালের উপরে তৈরি বেলি ব্রিজ। ওই দু’টি সেতুই শুধু নয়, সামনের সপ্তাহে খুলে দেওয়া হতে পারে নিউ আলিপুরের বি এল শাহ রোড এবং টালিগঞ্জের ইজাজাতুল্লা লেনের সংযোগকারী সেতু এবং চেতলা লকগেট সেতুও। মহালয়ার দিন ওই সেতুগুলি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির জন্য শেষ মুহূর্তের কাজ শেষ করা যায়নি বলে কেএমডিএ জানিয়েছে। উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ই এম বাইপাসের দিকের র্যাম্পে ফাটল দেখা দেওয়ার পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়ছিল। যানবাহনের চাপ কমাতে তাই ওই বেলি ব্রিজ তৈরি করা হয়। অন্য দিকে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়া এবং টালিগঞ্জের করুণাময়ী সেতুতে গর্ত তৈরি হওয়ার পরেই টালি নালার উপরে ওই সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেতুটির এক দিকে রয়েছে সিরিটি শ্মশান, অন্য দিকে টালিগঞ্জ উত্তমকুমার সরণি। পুলিশের দাবি, বেহালা সিরিটির দিক থেকে আসা সব ছোট গাড়ি ওই সেতু ধরে পৌঁছবে উত্তমকুমার সরণিতে। ট্র্যাফিক পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, নিউ আলিপুরের বি এল শাহ রোড এবং টালিগঞ্জের ইজাজাতুল্লা লেনের সংযোগকারী সেতু দিয়ে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড হয়ে আসা গাড়ি সোজা নিউ আলিপুর যেতে পারবে। যাতে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের উপরে চাপ কমবে। একই সঙ্গে বন্ধ থাকা চেতলা লকগেট সেতু দিয়েও গাড়ি চললে দক্ষিণ কলকাতার ট্র্যাফিক ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটবে বলে পুলিশের আশা।
পুজোর ক’দিন বেহালা, চেতলার যানজট কমাতে নিউ আলিপুরের বেলি ব্রিজ দিয়ে গাড়ি এক দিকে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। দুর্গাপুজোর সময়ে দুর্গাপুর সেতুর উপরে যানবাহনের চাপ কমাতে ওই সময়ে সারা দিন শুধুমাত্র আলিপুরের দিকে গাড়ি চলবে। বর্তমানে সকালে আলিপুরের দিকে গাড়ি যায়, আবার বিকেলে নিউ আলিপুরের দিকে যাওয়া যায় ওই বেলি ব্রিজ দিয়ে। পুলিশকর্তারা জানান, চেতলা-সহ নিউ আলিপুরের যান চলাচল
ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।