দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক। নিজস্ব চিত্র।
নেই গাড়ি বা মোটরবাইক চালানোর লাইসেন্স, নেই নম্বর প্লেটও। এই অবস্থাতেই কাগজে নম্বর লিখে মোটরবাইকে লাগিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন এক তরুণ। সেই অবস্থাতেই সরাসরি ডাম্পারের পিছনে ধাক্কা মারে মোটরবাইকটি। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তরুণ। শুক্রবার রাতে পার্ক সার্কাস কানেক্টরের কাছে এই ঘটনায় দ্রুত ওই তরুণকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মোটরবাইকটি আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। মৃতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন অফিসারেরা। ওই তরুণের সঙ্গে আরও কেউ ছিল কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত তরুণের নাম রণিত সিংহ (২০)। তিনি তিলজলা রোডের বাসিন্দা ছিলেন। দিন কয়েক আগেই মোটরবাইকটি তিনি হাতে পেয়েছিলেন। তাঁর পরিবার সূত্রে পুলিশ জেনেছে, দীর্ঘ দিন থেকে মোটরবাইক কিনে দেওয়ার জন্য বায়না জুড়েছিলেন রণিত। তবে মোটরবাইক হাতে পেলেও সেটির নম্বর প্লেট তৈরি হয়নি। তার আগেই রীতিমতো প্রভাব খাটিয়ে শোরুম থেকে মোটরবাইকটি তিনি বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। এর পরে তাঁর জন্য কোন নম্বর বরাদ্দ হয়েছে, তা জানতে পারার পরে সেটিই কাগজে লিখে মোটরবাইকের সামনে এবং পিছনে টাঙিয়ে দিয়েছিলেন ওই তরুণ।
পুলিশ জানিয়েছে, এই অবস্থাতেই মোটরবাইক নিয়ে শুক্রবার রাতে বেরিয়েছিলেন রণিত। পার্ক সার্কাস কানেক্টরের পিস ওয়ার্ল্ডের কাছে একটি চলন্ত ডাম্পারের পিছনে ধাক্কা মারে তাঁর মোটরবাইক। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরাই তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানিয়েছেন, মোটরবাইকটির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল। ডাম্পারের পিছনে ধাক্কা মারার পরে চালক বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়েন। কিন্তু রণিত রাতে একাই ছিলেন নাকি তাঁর সঙ্গে মোটরবাইকে আরও কেউ ছিল, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। অন্য কোনও মোটরবাইক সেই সময়ে রণিতের সঙ্গে যাচ্ছিল কিনা, সিসি ক্যামেরা দেখে তা-ও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। যদিও বিধি উড়িয়ে নম্বর প্লেট তৈরি হওয়ার আগেই কী করে কেউ এই ভাবে মোটরবাইক শোরুম থেকে বাড়ি নিয়ে চলে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, পর পর দুর্ঘটনার পরেও পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না কেন, তা নিয়েও। এই ঘটনাতেও মৃত বাইকচালকের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে পুলিশের দাবি।