প্রতীকী ছবি।
প্রায় ২১ বছর আগে তোলা হয়েছিল ছবিটা। সেখানে ব্যাকব্রাশ করা একমাথা চুল, বাঁকানো গোঁফ এখনও বোঝা গেলেও বাকিটা ক্রমে অস্পষ্ট হয়ে আসছে। কেএলও প্রধান জীবন সিংহকে চেনার জন্য এই ছবি কি যথেষ্ট? সোমবার জীবনের নামে বার্তা বলে দাবি করে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়, যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। এত দিন পর জীবন সিংহের নাম ও বার্তা সামনে এসে পড়ায় পুলিশের কাছে প্রথম ও প্রধান প্রশ্ন, তাঁকে চেনা। অথচ হাতে ২১ বছরের পুরনো ছবির মতোই কয়েকটি ফটোগ্রাফ। সেগুলির সাহায্যে কি জীবনকে আদৌ চেনা সম্ভব এখন— এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পুলিশের অন্দরে।
আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বাসিন্দা জীবন সিংহের ছাত্রাবস্থারও ছবি রয়েছে পুলিশের হাতে। তখন তিনি তমির দাস নামেই পরিচিত। ১৯৯২ সালে শিলিগুড়ি কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক হন তিনি। সে সময়েরও ছবি রয়েছে পুলিশের কাছে। কেএলও প্রতিষ্ঠার পরে তমির দাস হয়ে যান জীবন সিংহ। গোড়ার দিকে একবারই তিনি অসমে ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু প্রমাণ অভাবে ছাড়া পান এবং আত্মগোপন করেন। তবে ধরা পড়ার সময়ে পুলিশ তাঁর কিছু ছবি তুলে রেখেছিল। সেই ছবিগুলিই সরকারি ভাবে জীবন সিংহের পাওয়া শেষ ছবি। তার পর থেকে কেএলও প্রধানের কোনও খোঁজ নেই।
এখন প্রশ্ন, সোমবার যাঁর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তিনিই যে জীবন সিংহ, তা বোঝা যাবে কী ভাবে?
পুলিশ সূত্র বলছে, হাতে থাকা শেষ ছবিতে জীবনের লম্বা গোঁফ ছিল, ভিডিয়োর ব্যক্তির গোঁফ নেই। সপ্রতিভ চোখ দু’টিও দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, “পুরনো ছবির সঙ্গে ভিডিয়োর ব্যক্তির চেহারায় খোলা চোখে কোনও মিলই নেই। এখন মোবাইলে নানা অ্যাপ্লিকেশন হয়েছে, যেগুলি দিয়ে কোনও ব্যক্তি ২০ বা ৩০ বছর পরে কেমন দেখতে হবেন, তার অনুমান করা যায়। তার সাহায্য নেওয়া যতে পারে। তবে কী ফলহবে তা জানি না।”
তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বছর চারেক আগে জীবন সিংহের নামে একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তার সঙ্গে অবশ্য সোমবারে প্রকাশিত ব্যক্তির মিল আছে। তবে চার বছর আগের ছবিটিও যে জীবনের, তা কে বলতে পারে! প্রাক্তন এক কেএলও সদস্যদের কথায়, “আত্মগোপনকালে জীবন এখন হাই সুগারের রোগী। তাই চেহারা, চোখ ফুলে থাকতে পারে।’’
রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিজ্ঞ গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, চেনা যেতে পারে কন্ঠস্বরে। সেটা নিয়েই এখন ভাবছেন তাঁরা।