হোঁচট খাচ্ছে গরু-মোষের বিমাকরণ, নিরাশ গো-পালক

সরকারের খাতায়-কলমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৪-২০১৫ অর্থবর্ষে হুগলির ১৮টি ব্লকে গরুর বিমাকরণ প্রকল্পের আওতায় আনা গেল না বহু গরু-মোষকে। ফলে, প্রকল্পটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করলেন গো-পালকেরা। প্রয়োজন অনুযায়ী সে ভাবে তহবিল না মেলাতেই এই সমস্যা বলে মেনে নিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তাদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০১:১২
Share:

সরকারের খাতায়-কলমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৪-২০১৫ অর্থবর্ষে হুগলির ১৮টি ব্লকে গরুর বিমাকরণ প্রকল্পের আওতায় আনা গেল না বহু গরু-মোষকে। ফলে, প্রকল্পটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করলেন গো-পালকেরা। প্রয়োজন অনুযায়ী সে ভাবে তহবিল না মেলাতেই এই সমস্যা বলে মেনে নিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তাদের একাংশ।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র সরকারের প্রাণিসম্পদ বিমাকরণ প্রকল্পটি ২০১২ সাল নাগাদ এ রাজ্যের হুগলি-সহ ৬টি জেলায় শুরু হয়। প্রতিদিন তিন থেকে চার কেজি দুধ দেয় এমন গরু-মোষের বিমাকরণই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কেজিপ্রতি দুধের দাম তিন হাজার টাকা ধরে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকার বিমার পরিমাণ। তিন বছরের মধ্যে গরু দুর্ঘটনা বা অসুখে মারা গেলে চাষি এককালীন ১৮ হাজার টাকা পাবেন। চাষিকে এককালীন দিতে হবে ১০০ টাকা। বিমার বাকি প্রিমিয়াম দেবে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর।

২০১৪-২০১৫ অর্থবর্ষে জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাত হাজার গরু-মোষের বিমা। গত অক্টোবরেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যায়। অন্য জেলার খরচ করতে না-পারা তহবিলের টাকায় আরও প্রায় ৬০০টি গরুর বিমা করানো হয়। কিন্তু হুগলির ১৮টি ব্লকে দুধেল দেশি গরু, শঙ্কর গরু এবং মোষ মিলিয়ে সংখ্যাটি দু’লক্ষের উপর। ফলে, বহু গরু-মোষই প্রকল্পের আওতার বাইরে রয়েছে।

Advertisement

প্রকল্পটি যে গো-পালকদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা প্রবীর পাঠক। তবে, তিনি তহবিল কম থাকার কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “হুগলিতে বিমাকরণ প্রকল্পটির লক্ষমাত্রা পূরণ করে আমরা অন্য জেলার খরচ না-হওয়া তহবিল নিয়ে অতিরিক্ত গরুরও বিমা করিয়েছি। এমনই চাহিদা এখানে। তা সত্ত্বেও সব গরুকে প্রকল্পের আওতায় আনা যায়নি।”

কেন সব গরু-মোষকে প্রকল্পের আওতায় আনা যাচ্ছে না?

প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের রাজ্য অধিকর্তা সুভাষ বসুও তহবিল কম থাকার কথা সরাসরি মানতে চাননি। তিনি বলেন, “কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পটি এত দিন রাজ্যের ৬টি জেলায় চলছিল। সাফল্য মিলেছে। এ বার ন্যাশনাল লাইভলিহুড মিশন প্রকল্পের আওতায় নতুন ভাবে সবক’টি জেলাতে শুরু হবে বিমাকরণ। নতুন নির্দেশিকাও খুব শীঘ্রই প্রকাশ হবে। ফলে, বেশি সংখ্যক গরু-মোষকে এ বার প্রকল্পের আওতায় আনা যাবে।”

গো-পালকদের মধ্যে খানাকুলের ঘোষপুরের বৃন্দাবন মালিক, আরামবাগের হরিণখোলার মোক্তার আলি, গোঘাটের চাতরা গ্রামের শান্তি ঘোষ, তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙ্গা নিত্যানন্দ পাল প্রমুখের অভিযোগ, বিমাকরণের সুফলের কথাই তাঁরা শুধু জানতে পারছেন। বিমা আর করানো হচ্ছে না। ব্লক প্রাণিসম্পদ দফতরে গিয়ে তাঁদের ফিরে আসতে হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement