চার দিন কেটে গেলেও জট খুলল না ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে। শুক্রবারেও চটকলের গেট খোলা ছিল। কিন্তু কোনও শ্রমিকই কাজে যোগ দিলেন না। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এককালীন ২০০০ টাকা করেও নিতে এলেন না কেউ।
শ্রমিক অসন্তোষের জেরে প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পর গত ৩০ ডিসেম্বর চটকল খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩১ ডিসেম্বর চটকল খোলা হয়। ৬ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন চালু হওয়ার কথা ছিল। ৮ জানুয়ারি প্রত্যেক শ্রমিককে আগাম ২০০০ টাকা করে দেওয়া এবং তাঁদের প্রতি মাসের বেতন থেকে ২০০ টাকা করে কেটে নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। কিন্তু চটকলে উৎপাদন চালুর দিনেই কাজ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘স্পিনিং’ বিভাগের মেশিনপিছু এক জন করে শ্রমিককে কাজ করতে হবে এবং বাকিদের অন্য বিভাগে কাজ করতে হবে। এতেই কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয় শ্রমিকদের মধ্যে। তার পর থেকে শ্রমিকেরা কাজে না আসায় বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবারও তাঁরা না আসায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতো ২০০০ টাকা করেও পেলেন না।
চটকলের সিইও রাজেন্দ্র সিংহ বলেন, “চটকলের গেট খোলাই রয়েছে। শ্রমিকদের টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতও ছিলাম। তাঁরা যদি কাজেই যোগ না দেন, তবে টাকা দেব কাদের? ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনেই চটকল চালু করা হয়েছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বোঝাপড়ার অভাবেই ফের অচলাবস্থা। তবে, আমরা ধৈর্য ধরছি। কাজে যোগ দিয়ে শ্রমিকেরা ওই টাকা চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত।”
কিন্তু শ্রমিকেরা টাকা নিতেও এলেন না কেন?
‘স্পিনিং’ বিভাগের শ্রমিক বরুণ শর্মা বলেন, “অভাবের সংসারে আমাদের কাছে ২০০০ টাকা অনেক। কিন্তু আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি, সেখান থেকে বেরনোর কোনও রাস্তা নেই। কয়েক জন শ্রমিকের জন্য সব শ্রমিক যখন আন্দোলনে নেমেছেন, তখন আমাদেরও থাকতে হবে। পিছু হটলে আমাদের পিছনে কেউ থাকবেন না।” একই বক্তব্য আরও অনেকের।