রান্না করতে ব্যস্ত অপর্ণাদেবী (বাঁ দিকে)। মধ্যাহ্নভোজ সারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
মঙ্গলবার দুপুর ২টো ১৫: গোঘাটের দক্ষিণপাড়ার ভাগচাষি প্রশান্ত রায়ের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরে বেরলেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য।
বিকেল সওয়া ৪টে: প্রশান্তর বাড়িতে হাজির গোগাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার। কিছুক্ষণ কাটানোর পরে বেরিয়ে বললেন, ‘‘ভয় দেখাতে নয়, বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচি নিয়েই এসেছিলাম।’’
এ দিন দলীয় কর্মসূচিতে গোঘাটে এসেছিলেন কেশবপ্রসাদ। প্রশান্তর বাড়িতে ঢোকার আগে রাস্তায় তাঁকে কালো পতাকা দেখায় তৃণমূল। এ নিয়ে কেশবপ্রসাদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা দেখে আমি নিশ্চিত যে, পরের বছরে এ রাজ্যে আমরাই ক্ষমতায় আসছি।’’
কেশবপ্রসাদের আপ্যায়নে ত্রুটি রাখেননি প্রশান্ত ও তাঁর স্ত্রী। মধ্যাহ্নভোজে ছিল, রুটি, ভাত, আলু ও ফুলকপি দিয়ে পোস্ত, মটর-গাজর আর বিন দিয়ে সবজির ডাল, শুক্তো, বেগুন ভাজা, আলু ভাজা, কড়লা ভাজা, শাক ভাজা, খেজুরের চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি এবং পায়েস। বিজেপি নেতাকে খাইয়ে তৃপ্ত প্রশান্তর স্ত্রী অপর্ণা।
প্রশান্ত বলেন, ‘‘সোমবার সকালে আচমকাই আমাকে বলা হয়, আমাদের বাড়িতে দুপুরের খাবার খাবেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী। কেউ আতিথ্য নিতে চাইলে ভাল লাগে। খুশি হয়েই রাজি হয়েছি। যা কিছু আনাজ রান্নায় লেগেছে, তার অধিকাংশই নিজের জমিতে ফলেছিল। সব হিসাব করলে হাজার টাকাও খরচ হয়নি।’’ তারপর বলেন, ‘‘কাল তৃণমূল বিধায়ক মানসবাবু কিংবা অন্য কেউ খেতে চাইলেও আমরা ধন্য হব।’’ তাঁকে দু’ঘণ্টাও অপেক্ষা করতে হয়নি। বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন মানস। বিধায়কের কাছে অপর্ণার অভিযোগ, তাঁর ঠাকুমা এবং শাশুড়ি এখনও বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন না। অপর্ণার বাড়িতে কিছুক্ষণ কাটিয়ে বেরিয়ে আসেন মানস।
ভয় দেখিয়ে এলেন? পাশ থেকে হাসির ছলে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। হেসে মানসের জবাব, ‘‘ভয় দেখাতে নয়। বঙ্গধ্বনি যাত্রা উপলক্ষ্যে এসেছিলাম। বার্ধক্যভাতা নিয়ে ওঁরা কিছু বলেছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ব্যবস্থা হবে।’’
কেশবপ্রসাদ আসার আগেই গোঘাটকে দলীয় পতাকায় মুড়ে দিয়েছিল তৃণমূল। এ দিন বকুলতলায় একটি লজে এলাকার বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
তারপর প্রশান্তর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারতে যান।