প্রতীকী চিত্র।
তিনি শুক্রবার বিকেলে বৈঁচিতে দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সভায় গিয়েছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ ওই রাতে গুড়াপের কুলবাড়ুই গ্রামের দলীয় সমর্থক রাকেশ ক্ষেত্রপালকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের ছেলেরা গুলি করে খুনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। গুলিবিদ্ধ ওই যুবক কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার জেরে এলাকা তেতে ওঠে। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিজেপি। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
শনিবার রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানায়, ওই যুবকের বুকে গুলি লাগে। হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তদন্ত চলছে। দোষীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাকেশ কেরলে কাঠের কাজ করেন। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। শনিবার তাঁর কেরল যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ওই ঘটনা। রাকেশের মা মালতিদেবী বলেন, ‘‘খাওয়াদাওয়া সেরে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আমরা কথা বলছিলাম। তিন-চারটে ছেলে এসে ওকে ডেকে নিয়ে যায়। ওদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। অনেকক্ষণ পরেও ছেলে না-ফেরায় বেরিয়ে দেখি, পাশের মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’ শনিবার দুপুরে রাকেশের বাবা অরবিন্দবাবু গুড়াপ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি করার জন্য ছেলেকে গুলি খেতে হবে, ভাবতে পারিনি।’’
ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকা তেতে ওঠে। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ভাস্তারা মোড়ে প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করে বিজেপি। রাস্তায় টায়ার জ্বালানো হয়। পুলিশ আসে। স্থানীয় বিজেপি নেতা হেমন্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরাই গুলি করেছে।’’ একই দাবি করে দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীর নাগ বলেন, ‘‘পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে। সেটা না-পারলে আরও বড় আন্দোলন করা হবে।’’ বিজেপি নেতৃত্বের তরফে রাকেশের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় বাড়ির লোকজনকে। দুপুরে লকেট হাসপাতালে যান। সন্ধ্যায় রাকেশের বাড়িতে যান দলের নেতা সায়ন্তন বসু। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা পাত্র থেকে দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল-যোগ মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে।
গুড়াপের ঘটনা এবং শুক্রবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে হামলার প্রতিবাদে শনিবার সকালে ডানকুনিতে লালবাবা রোড অবরোধ করে বিজেপি। একই কারণে শ্রীরামমপুরের বটতলায় জিটি রোড অবরোধ হয়। সেখানে দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু, দলীয় নেতা ভাস্কর ভট্টাচার্য। আরামবাগের গৌরহাটি এবং খানাকুলের চক্রপুরেও অবরোধ হয়।