উলুবেড়িয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অসমাপ্ত বাড়ি। ছবি: সুব্রত জানা।
বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের ভাগের টাকা পুরসভাকে দিয়েছেন বছর দুই আগে। কিন্তু এখনও সেই ৫০ জন উপভোক্তা হাতে বাড়ি পেলেন না। এ জন্য তাঁরা পুরসভার দিকে আঙুল তুলেছেন। এই চিত্র উলুবেড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খাজুরি এলাকার।
২০০৮ সালে বিএসইউপি (বেসিক সার্ভিসেস ফর আরবান পুওর) প্রকল্পে ২১০০ বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করে পুরসভা। প্রতি উপভোক্তা পিছু বরাদ্দ হয় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র। বাকি রাজ্য, পুরসভা ও উপভোক্তা দেবে। উপভোক্তাদের দেওয়ার কথা ২৫,০০০ টাকা। ঠিক হয়, সকলের ভাগের টাকা নিয়ে পুরসভা ঠিকাদার নিয়োগ করে বাড়ি তৈরি করে দেবে। ২০১০ নাগাদ কাজ শুরু হয়। প্রথমে ১৭৫৭টি বাড়ির কাজে হাত দেয়। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পুরসভা ১৭০৭টি বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেললেও ওই ৫০টি পরিবার এখনও বাড়ি পেল না।
কিন্তু কেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কথা মতো কাজের ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ কেন্দ্রের কাছে উলুবেড়িয়া পুরসভা জমা দিতে পারেনি। ফলে কাজ ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে। ২০১৫ সালের গোড়ার দিকে পুরসভা ফের কাজে হাত দেয় এবং ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে শুরু করে। কিন্তু সময় মতো কাজ না হওয়া এবং টাকা খরচের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট না দিতে পারার জন্য ২০১৫ সালের জুন মাস নাগাদ কেন্দ্র উলুবেড়িয়া পুরসভায় এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তবে ১৭০৭টির মধ্যে নির্মীয়মাণ ৩৫০টি বাড়ির অনুমোদন বাতিল করে দেয়।
কিন্তু সময়ে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হল না কেন? পুরসভার দাবি, ওই সময়ে পুর-প্রশাসকের (পুরভোট না হওয়ায় উলুবেড়িয়ার তৎকালীন মহকুমাশাসক পুর-প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন) কাছে এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। ফলে তিনি বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ রেখে তদন্তের নির্দেশ দেন। তাতেই সমস্যা তৈরি হয়।
উপভোক্তাদের প্রশ্ন, পুরসভার গাফিলতির ফল তাঁদের ভোগ করতে হবে কেন? এক উপভোক্তা শেখ মইনুদ্দিনকে দেখা গেল, তিনি ভাইয়ের জরির কারখানায় বাস করছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘টাকা দেওয়া রয়েছে। অথচ পুরসভা বাড়ি করে দিচ্ছে না। ফলে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। শীতে কষ্ট হচ্ছে। পুরসভা দ্রুত বাড়ি তৈরি করে দিলে ভাল হয়।’’ একই বক্তব্য সব উপভোক্তার। এ প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সরকার বলেন, ‘‘টাকার সমস্যা রয়েছে। তবে আমরা বাকি বাড়িগুলি যাতে দ্রুত তৈরি করা যায় সেটা দেখছি।’’