প্রতীকী ছবি।
ভোট প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সব দলই সড়গড়। তার ব্যবহারও বাড়ছে। তবু হাওড়ায় সব দলই বেশি ভরসা রাখছে সাবেক পদ্ধতিতে ভোট প্রচারেই।
সাবেক পদ্ধতি— অর্থাৎ দেওয়াল লিখন, পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্স বা সরাসরি বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ। এ ক্ষেত্রে প্রধান চার দলেরই সুর প্রায় একই। তাদের দাবি, ফেসবুকে ‘লাইক’ বা ‘কমেন্ট’-এ নিজেদের জনপ্রিয়তা কতটা যাচাই করা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক বিপ্লব মজুমদারের কথায়, ‘‘ফেসবুকে কোনও পোস্টে কেউ ‘লাইক’ বা ‘কমেন্ট’ দিলেই তাকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। অনেক ‘কমেন্ট’-এ কোনও রাজনৈতিক সারবত্তা মেলে না।’’ এ বছর ২৩ জানুয়ারি থেকে জেলায় নতুন ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর জন্য শুভেচ্ছা-বার্তা পৌছে দিচ্ছে সিপিএম। সে কথা তুলে বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘সাবেক পদ্ধতিতে প্রচারের গুরুত্ব এ যুগেও অপরিসীম। তাতে মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। তাঁদের প্রতিক্রিয়াও মেলে। শুভেচ্ছা-বার্তা বিলির কর্মসূচিও সফল হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সাবেক পদ্ধতিতে প্রচারই যে তাঁদের ভোটের জন্য প্রধান অস্ত্র, তা স্বীকার করেন দলের তৃণমূলের (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি পুলক রায়ও। তিনিও বলেন, ‘‘সামাজিক মাধ্যমে অনেক অরাজনৈতিক কথাবার্তা দেখা যায়। তা দিয়ে রাজনৈতিক গুরুত্ব পরিমাপ করা যায় না। তাই আমরা বছরভর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলি। নির্বাচনের সময় ফের সকলের বাড়ি যাব।’’
বিজেপির হাওড়া (গ্রামীণ) এলাকায় অন্তত ২৫০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে বলে জানান দলের (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক। তবু তিনিও সাবেক পদ্ধতির গুরুত্ব অস্বীকার করেননি। কংগ্রেস নেতারা এখনও প্রচারে না-নামলেও পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগে জোর দেওয়ার কথাই বলেছেন।
তৃণমূলের মতো জেলা সিপিএমের কোনও আলাদা ‘আইটি সেল’ নেই। দলের জেলা সম্পাদক বিপ্লববাবু জানান, দলীয় কর্মীরাই সোশ্যাল মিডিয়া সামলাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে বহু ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ আছে। তা ছাড়া দলের জেলা কমিটির আলাদা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘নির্বাচনের সময়ে সেগুলি আরও বেশি করে ব্যবহার করা হবে।’’
জেলায় দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের (হাওড়া সদর এবং উলুবেড়িয়া) সঙ্গে এ বার উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। কেন্দ্রগুলির জন্য দলের তরফে আলাদা করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং ‘হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ’ খুলেছে শাসকদল। পুলকবাবু বলেন, ‘‘ছাত্র-যুবরা দক্ষতার সঙ্গে সামাজিক মাধ্যম সামলাচ্ছেন। বিরোধীদের কুৎসা ও অপপ্রচারের যেমন জবাব দেওয়া হচ্ছে তেমনই আমাদের সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্মও নিরন্তর তুলে ধরা হচ্ছে।’’
একই ভাবে ফেসবুক-টুইটারে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। দলের জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ‘হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ’গুলিতে বিজেপি সদস্যেরা যেমন আছেন, তেমনই সমমনোভাবাপন্ন সাধারণ মানুষকেও রাখা হয়েছে।