Depression

হতাশা, অবসাদ? খোঁজ নিতে আসছেন স্বাস্থ্যকর্মী

জেলায় চালু হতে যাওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘মানসিক স্বাস্থ্যপ্রকল্প’।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ হয়তো অবসাদে ভুগছেন দীর্ঘদিন, কারও মনের অসুখ হয়তো আরও জটিল! কারও মধ্যে হয়তো আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ছে। হাওড়া জেলায় এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু পরিবারের লোকজনের সচেতনতার অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই ওই সব অসুস্থ মানুষেরা সঠিক চিকিৎসা বা কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পান না। তাঁদের জন্য এগিয়ে এল স্বাস্থ্য দফতর। এ বার জেলার বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নেবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অবসাদগ্রস্তদের মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তির নিদান দেবেন।

Advertisement

জেলায় চালু হতে যাওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘মানসিক স্বাস্থ্যপ্রকল্প’। রাজ্যের ২৮টি ‘স্বাস্থ্য জেলা’র মধ্যে ১১টিতে জেলায় এই প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে। হাওড়া-সহ বাকি জেলাগুলিতেও এ বার প্রকল্পটি চালু হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর। সোমবারই এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি হয়েছে।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, বিশেষ করে অল্পবয়সীদের মধ্যে নানা কারণে অবসাদগ্রস্ততা বেড়ে চলেছে। তা যাতে আত্মঘাতী হওয়ার পর্যায় পর্যন্ত না পৌঁছয়, তা দেখার জন্যই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির তত্ত্বাবধানের জন্য জেলায় একটি কমিটি গড়া হচ্ছে। সেই কমিটিই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ-সহ প্রকল্পটির নিয়মিত পর্যালোচনা করবে। প্রাথমিক ভাবে ওই কমিটি জেলা স্তরে একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন, এমন একজন সমাজকর্মী, একজন মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নার্স এবং একজন ‘রেকর্ড কিপার’ নিয়োগ করবে। ‘রেকর্ড কিপারের’ কাজ হবে কত জন মানুষ কী ধরনের মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত তার হিসাব রাখা। নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, ‘‘মানুষের মধ্যে অবসাদগ্রস্ততা বা হতাশা দিন দিন বাড়ছে। সময়মতো তাঁদের চিকিৎসা বা কাউন্সেলিং করানো গেলে হয়তো তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। যে ১১টি জেলায় প্রকল্পটি চলছে, তাতে এই ভাবে অনেককে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে।’’

স্বাস্থ্যভবনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। কেউ যদি কোনও মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাঁকে চিহ্নিত করবেন। তারপরে প্রথমে তাঁর কাউন্সেলিং করা হবে। তাতেও যদি কাজ না হয়, তা হলে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে তাঁর মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের নিয়োগ হয়ে গেলেই নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রশিক্ষণ দেবেন বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের। চিকিৎসক ও নার্সরা আবার প্রশিক্ষণ দেবেন আশাকর্মীদের। একেবারে তৃণমূল স্তরে আশাকর্মীরা কাজ করবেন।

স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা জানান, এমনিতেই প্রসূতিদের খোঁজখবর করতে যাওয়ার সূত্রে বাড়ি বাড়িতে আশাকর্মীদের অবারিত দ্বার। বিভিন্ন পরিবারের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও আছে। ফলে, তাঁরা যখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর করতে যাবেন তখন তাঁদের সামনে অনেকে সহজে মুখ খুলবেন। সমস্যার গভীরতা অনুযায়ী অবসাদগ্রস্তদের কাউন্সেলিং বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থাটির তত্ত্বাবধান করবেন বা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement