উলুবেড়িয়ার ১৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে পদ্ম

যে ১৬টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে সেগুলি হল— ৩, ৪, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৬, ১৯, ২০, ২১, ৩০, ২৬, ২৯ এবং ৩০।

Advertisement

নুরুল আবসার, সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া: শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ১০:১৮
Share:

রাতারাতি: উলুবেড়িয়া পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ বেদি গড়ল বিজেপি। —নিজস্ব চিত্র

জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ। বেড়েছে ভোটও। তবু আগামী বছর উলুবেড়িয়ায় পুরভোট নিয়ে এখন থেকেই তৃণমূল নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে। কারণ, ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতেই এগিয়ে পদ্ম শিবির।

Advertisement

বর্তমানে পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ড তৃণমূলের হাতে রয়েছে। বিজেপি এবং সিপিএমের হাতে আছে চারটি করে ওয়ার্ড। যে ১৬টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে, তার মধ্যে তাদের নিজেদের দখলে থাকা তিনটি ওয়ার্ড রয়েছে, অন্যটি রয়েছে সিপিএমের দখলে। বাকি ১২টি তৃণমূলের দখলে। তৃণমূলও অবশ্য বিজেপির একটি এবং সিপিএমের দখলে থাকা দু’টি ওয়ার্ডে এগিয়ে আছে।

যে ১৬টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে সেগুলি হল— ৩, ৪, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৬, ১৯, ২০, ২১, ৩০, ২৬, ২৯ এবং ৩০। তৃণমূলের একটি বড় অংশের অভিযোগ, সাংগঠনিক কারণেই পুর এলাকায় দলের এই হাল। অভিযোগের তির মূলত দলের উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি বেণুকুমার সেনের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, কর্মীদের নিয়ে বেণুবাবু কোনও বৈঠক বা আলোচনা করেন না। বিধানসভা কেন্দ্র-ভিত্তিক কোনও কমিটি তৈরি হয়নি। এর ফলে দলের কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সেটাই খারাপ ফলের মূল কারণ। তা ছাড়া, এই বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের প্রার্থী ইদ্রিশ আলিকে নিয়ে দলের অন্দরেই

Advertisement

ক্ষোভ দেখা দেয়। সেটাও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করে বলে দলের অন্য একটি অংশ মনে করেন।

ইদ্রিশকে প্রার্থী করা নিয়ে মূলত যাঁর নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়েছিল, সেই উপ-পুরপ্রধান আব্বাসুদ্দিন খান অবশ্য বলেন, ‘‘দলের নেতাদের হস্তক্ষেপে আমরা বিক্ষোভ তুলে নিয়েছিলাম। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম প্রার্থীকে জেতাতে। আমার ওয়ার্ড থেকেই ইদ্রিশ সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জিতেছেন।’’ বেণুবাবু স্বীকার করেন, দলের সাংগঠনিক কিছু দুর্বলতা ছিল। সেই কারণেই ফল কিছুটা বিপক্ষে গিয়েছে। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এই ক্ষতিপূরণ করা যাবে। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আমরা অনেক ওয়ার্ডে হেরে যাই। তারপরেই ২০১৫ সালে পুরসভা দখল করি। আসলে লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনের চরিত্র আলাদা। তার সঙ্গে পুরসভাকে মেলানো যায় না। আমরা মানুষের সঙ্গে সবসময় থাকি। ২০২০ সালের নির্বাচন‌ে ফের পুরসভা দখল করব।’’ বিরোধীদের অবশ্য দাবি, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের ফলেই তৃণমূল ১৬টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়েছে।

তৃণমূলের দখলে থাকা ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি এখানকার বাহিরতফা রথতলায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি শহিদ বেদি তৈরি করে। আগেই এখানে সিপিএম একটি শহিদ বেদি তৈরি করেছে। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে পাশেই তৃণমূলও একটি শহিদ বেদি তৈরি করে। বিজেপিরটি হল তৃতীয়। দলের নেতা দ্বিজেন অধিকারী বলেন, ‘‘এর আগে আমরা শহিদ বেদি তৈরি করতে চাইলেও তৃণমূল করতে দেয়নি। তাই লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে যাওয়ার ফলে এখানে আমরা শহিদ বেদি তৈরি করলাম দলের নিহত কর্মীদের স্মরণে।’’ হাটকালীগঞ্জে শুক্রবার সিপিএমের একটি শহিদ বেদি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement