ফাইল চিত্র।
মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্ত ভার সিআইডি-র হাতে তুলে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিচারপতি মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন, এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে।
পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম কার্তিক কোলে। তিনি হুগলির চণ্ডীতলা থানা এলাকার হে়ড়িয়াদহ গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন আগেই তাঁর বাবা-মা মারা গিয়েছেন। বোন নন্দরানিকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। ছোট বোনও মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন। প্রতিবেশীরাই তাঁদের দেখাশোনা করতেন।
অভিযোগ, গত বছর ৩ জুলাই চিকিৎসার নাম করে কার্তিককে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে নিয়ে যান কার্তিকের মামা ও মামার তিন ছেলে। তারপর থেকে আর কার্তিকের খোঁজ মেলেনি বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। কার্তিক দাস নামে এক প্রতিবেশী যুবককে নন্দরানি জানান, এক মাস ধরে দাদার খোঁজ নেই, মামারা নিয়ে গিয়েছে। একটি দলিলও তিনি কার্তিককে দেখান। তা দেখে বোঝা যায় একটি পারিবারিক জমি তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন কার্তিক কোলে। কিন্তু সে টাকা কোথায়, জানাতে পারেননি নন্দরানি।
অভিযোগ, এর পরেই চণ্ডীতলা থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন কার্তিক দাস। কিন্তু তাঁকে থানা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। কার্তিক জানিয়েছেন, তিনি গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও আবেদন করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত শ্রীরামপুর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ করেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ পেয়ে কার্তিক কোলেকে অপহরণের অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ যুবকের।
সে কারণে এ বছর জানুয়ারি মাসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন কার্তিক দাস। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি মান্থার আদালতে। প্রতিবেশীর আইনজীবী তীর্থঙ্কর দে বলেন, ‘‘সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানিয়েছেন কার্তিক কোলের এক মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে। কার্তিক কোলে মারা গিয়েছে বলেও সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানিয়েছেন। কিন্তু ওই যুবক কী ভাবে মারা গেলেন, কবে তাঁকে দাহ করা হল, সেই সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।’’
বিচারপতি সিআইডি-র এক ডিএসপি-কে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। হুগলির জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন, নন্দরানিদের বিক্রি হয়ে যাওয়া জমির দখল নিতে।