প্রতীকী ছবি।
বর্ষায় যে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিতে পারে, সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে মাস ছয়েক আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল ঘর। যেখানে রক্তের বিভিন্ন উপাদান আলাদা করার জন্য বিশেষ ইউনিট চালু করার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না পাঠানোয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে এখনও চালু করা যায়নি ডেঙ্গির চিকিৎসার জন্য অতি প্রয়োজনীয় প্লেটলেট আলাদা করার পরিকাঠামো বা ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’। এই ব্যবস্থা চালু হলে শুধু ডেঙ্গি নয়, অন্য রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও খুব সুবিধা হবে বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রতি বছরই হাওড়ায় ভয়াবহ আকার নেয় ডেঙ্গির প্রকোপ। মৃত্যুও হয় বহু মানুষের। এ বছরও কোভিডের সময়ে ডেঙ্গি দেখা দিয়েছে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে। সঙ্কটজনক ডেঙ্গি রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হয় প্লেটলেটের। যা আনতে যেতে হয় কলকাতায়। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর গত বছর হাওড়া জেলা হাসপাতালে রক্তের উপাদান আলাদা করার ইউনিট তৈরির জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। হাসপাতালের নতুন ভবনের তেতলায় ওই ইউনিটটি তৈরি হয়ে গিয়েছে ছ’মাস আগেই। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এখনও সরঞ্জাম না পাঠানোয় চালু করা যায়নি কাজ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গি রোগীদের প্লেটলেট দিতে হলে তা নিয়ে আসতে হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা অন্য কোথাও থেকে। কিন্তু রক্তের উপাদান বিভাজনের ইউনিটটি এক বার চালু হয়ে গেলে হাওড়া হাসপাতালেই রক্ত থেকে প্লেটলেট আলাদা করে নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে তা সংরক্ষণও করা যাবে। প্লেটলেট সংগ্রহ করতে আর অন্য কোনও হাসপাতাল বা ব্লাড ব্যাঙ্কে ছুটতে হবে না। বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে রোগীদের লোহিত রক্তকণিকা দিতে হয়। এই ব্যবস্থায় সেই লোহিত কণিকাও আলাদা করে রাখা যাবে।
হাওড়া জেলা হাসপাতালের এক পদস্থ অফিসার বললেন, ‘‘ইতিমধ্যেই এখানে এসে গিয়েছে অ্যাজিটেটর মেশিন। প্লেটলেটের মতো রক্তের উপাদান সংগ্রহ করে তা ওই যন্ত্রে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এই ব্যবস্থাকে বলা হচ্ছে ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’। আরও কিছু যন্ত্র আসা বাকি রয়েছে। সেগুলি এলেই এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটটি কাজ শুরু করে দেবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোভিড অতিমারির জন্য এই ইউনিটটা চালু করা যায়নি। আশা করা যায়, আর মাস তিনেকের মধ্যেই সমস্ত সরঞ্জাম এসে যাবে।’’