—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হুগলির জেলাসদরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটার নাম নেই। বরং হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভাকে ঘিরে সেই দ্বন্দ্ব ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। পুরসভায় তৈরি হচ্ছে অচলাবস্থা। গত সোমবার পুরপ্রধান অমিত রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন তৃণমূলেরই ১৯ জন পুরসদস্য (কাউন্সিলর)। যাঁরা দলে অমিতের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর (বিধায়ক ঘনিষ্ঠ) বলে পরিচিত। বিধায়ক অসিত মজুমদারকে ওই অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অসীমা পাত্রের দাবি। কিন্তু বিধায়কের পাল্টা দাবি, দল এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি। ফলে, ওই পুরসভায় জটও এখনই কাটার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
পুর-আইন বলছে, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ১৫ দিনের মধ্যে পুরপ্রধানকেই বৈঠক ডাকতে হয়। অমিত বলেন, ‘‘আইনি ব্যাপার। চিঠিতেও কিছু ত্রুটি রয়েছে। হাতে সময় আছে। সব দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
অমিতের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্ল ও পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। অনাস্থার পক্ষে থাকা কাউন্সিলরদের দাবি, অমিতের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। পুরসভায় কাজের গতি আনতেই অনাস্থার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অসীমা বলেন, ‘‘দল কাউন্সিলরদের ধরে ধরে ফোন করতে পারে না। তাই ওই প্রস্তাব প্রত্যাহার করানোর জন্য বিধায়ককে বলা হয়েছে।’’ কিন্তু বিধায়কের সুরেই দলীয় কোনও নির্দেশ আসেনি বলে দাবি করেছেন অনাস্থার পক্ষে থাকা তৃণমূল কাউন্সিলরেরাও। অসীমা বলেন, ‘‘বিধায়ক ওই কাউন্সিলরদের বলেছেন কি না, আমি বলতে পারব না।’’ অসিত পাল্টা বলেন, ‘‘দল আমাকে কোনও নির্দেশ দেয়নি। অনাস্থার ব্যাপার কাউন্সিলররা জানেন। আমার কোনও
ব্যাপার নেই।’’"
৩০ আসনবিশিষ্ট এই পুরসভায় অমিতের পক্ষে ৯ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। অসিতের পক্ষে ১৯ জন। নিরপেক্ষ ১ জন সিপিএমের। এক কাউন্সিলর মারা গিয়েছেন।
পুরসভার এই সঙ্কটে পরিষেবায় সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শহরবাসী। তাঁরা চান দলীয় কোন্দল মিটিয়ে পরিষেবা সচল থাকুক। সিপিএম কাউন্সিলর বিপ্লব দাস, ‘‘তৃণমূলে সমস্যা ছিল, আছে, থাকবে। তবে, এই মুহূর্তে রাজ্যের পরিস্থিতি সঙ্কটময়। তাই, চুঁচুড়া পুরসভার বিষয় নিয়ে আমরা ভাবিত নই। প্রশাসন বুঝবে।’’