mal nutrition

mal nutrition: শিশুদের অপুষ্টি ঠেকাতে ময়দানে স্বনির্ভর গোষ্ঠী

গোষ্ঠীর মহিলারা ঘরে ঘরে শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার ওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে সচেতনতা প্রচার চালাবেন।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৩১
Share:

শিশুর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে জল পেরিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন আশাকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

অঙ্গনওয়াড়ির শিশুদের পুষ্টি ফেরাতে কেন্দ্রগুলি খোলার পাশাপাশি ডিম-সয়াবিন দেওয়ার দাবি উঠছে নানা প্রান্ত থেকে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। তবে, শিশুদের অপুষ্টি নির্মূল করতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নামানো হচ্ছে। গোষ্ঠীর মহিলারা ঘরে ঘরে শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার ওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে সচেতনতা প্রচার চালাবেন।

Advertisement

গত ৮ সেপ্টেম্বর রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব শুক্তিসিতা ভট্টাচার্যের সই করা ওই নির্দেশিকা সব জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদের সচিব হেমন্ত ঘোষ বলেন, “ওই কার্যক্রম চালু হয়েছে। পৌষ্টিক খাবার নিয়ে সচেতনতার অভাব আছে। খাবার দেয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। গোষ্ঠীগুলি পুষ্টি সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াবে।”

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যের গ্রামীণ জীবিকা মিশন তথা আনন্দধারা প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে গ্রামে নিয়মিত সভা করে খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, নিয়মিত হাত ধোওয়া নিয়ে আলোচনা চালাতে হবে। সর্বোপরি, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে কোভিড-বিধি মেনে
প্রতি মাসে ‘সুস্বাস্থ্য দিবস’ সভা করতে হবে। এই কর্মসূচিতে গ্রামের ‘স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি কমিটি’গুলিকেও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে।

Advertisement

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কোন বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা এবং সচেতন করবে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। যেমন, এ রাজ্যে ৫ বছরের নীচের বাচ্চাদের প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৩২ জনের ওজন কম। ৩৪ জনের শরীর বয়সের তুলনায় ছোটখাটো। আর ২০ জনের
উচ্চতার তুলনায় ওজন কম। এ ছাড়াও প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে ৬৯ জনের (৬ থেকে ৫৯ মাস) শরীরে রক্তের অভাব। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে রোজকার খাবারে কোন কোন পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে সেই সংক্রান্ত বিশদে বলা হয়েছে। জন্মের পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত একটি শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত, জলও নয়। ১ বছর বয়স থেকে শিশুকে বাড়ির সকলের সঙ্গে পুষ্টিকর একই খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে ইত্যাদি।

প্রসঙ্গত, সুসংহত শিশু বিকাশ তথা আইসিডিএস প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সাল নাগাদ ‘পুষ্টি ও বিকাশ’ কর্মসূচি চালু করেও শিশুদের অপুষ্টি রোখা যায়নি। পৌষ্টিক খাবার সরবরাহে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পাশাপাশি সচেতনতা এবং নজরদারি কাজে লাগানো হয়েছিল আশাকর্মীদেরও। বছর তিনেক আগে বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দিতে এবং একই সঙ্গে মশাবাহিত রোগ সামলাতে সংসদপিছু “গ্রাম স্বাস্থ্যবিধান ও পুষ্টি কমিটি” গঠন করা হয়। তারপরেও শিশুদের পুষ্টি বা সার্বিক সুস্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি
বলে অভিযোগ।

হুগলির একাধিক শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অপুষ্ট শিশুদের হার কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু করোনা পর্বে যথাযথ পরিষেবা দেওয়া যায়নি। জেলায় অপুষ্ট শিশুদের সংখ্যা চিহ্নিত করার কাজ গত অগস্ট মাস থেকে শুরু হয়েছে। সেই সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

জেলা নারী-শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর মার্চ মাস পর্যন্ত হুগলিতে চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ছিল ১৪০ জন। মাঝারি অপুষ্ট ছিল প্রায় ১২ হাজার। এ বছর এখনও পর্যন্ত শুধু গোঘাট-২ ব্লকেই চরম অপুষ্ট শিশু চিহ্নিত হয়েছে ৭২ জন। আংশিক এবং মাঝারি অপুষ্ট শিশু মোট ১৫৫ জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement