ক্ষতিগ্রস্ত ফুলকপির চারা। সোমবার সিঙ্গুরে। ছবি: দীপঙ্কর দে।
গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টির জেরে হাওড়া ও হুগলি—দুই জেলার চাষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিকর্তারা। তাঁদের দাবি, ধানের ক্ষতি হয়েছে সবথেকে বেশি। ক্ষতি হয়েছে আনাজ চাষেরও। তবে পলিশেডে (চাষের জন্য প্রয়োজনীয় আচ্ছাদন) যে আনাজ চাষ হয়েছিল, রক্ষা পেয়েছে সেগুলো।
ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব কষতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন হুগলি জেলা প্রশাসন ও পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হুগলিতে ৩১২ হেক্টর আমন ধান এবং ২১২ হেক্টর আনাজ চাষে ক্ষতি হয়েছে। ব্লক কৃষি আধিকারিকরা সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিয়েছেন।’’ হাওড়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমেশচন্দ্র পালও জানান, চাষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে সমীক্ষার কাজ চলছে।
গত জুলাইয়ের শেষে বন্যার জেরে আরামবাগ মহকুমায় ক্ষতি হয়েছিল আনাজ চাষে। পুরশুড়ার কেলেপাড়ার চাষি বাপ্পাদিত্য ধোলে বলেন, “গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পর ঢেঁড়স, বেগুন কিছুটা রক্ষা পেলেও নিচু জমির মাচার ফসল উচ্ছে, ঝিঙের ক্ষতি হয়েছে।” জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক মৌটুসি মিত্র ধর বলেন, “বর্ষার আনাজ চাষ শেষ হয়ে শীতকালীন আনাজ চাষ শুরু হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে
জলদি জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে ক্ষতি হয়েছে।’’ খানাকুল-২ ব্লকে জমা জলের কারণে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। আরামবাগের মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, “এ বার ২০৮৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৩১২ হেক্টর জমির চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
টানা বৃষ্টির জেরে বৈদ্যবাটীর চক ও দীর্ঘাঙ্গ মৌজায় কয়েকশো বিঘার রোয়া ধান জলের তলায়। বিঘাটির রাঘবপুর, ধবাপুকুর ও গৌরাঙ্গপুর এলাকার ধান, কলাবাগান, পেঁপে বাগান ও আনাজ চাষের জমিও কোমর সমান জলে।
চলতি বছরে হাওড়া জেলায় আউস ধানের চাষ হয়েছে ৯০০ হেক্টর জমিতে। টানা বৃষ্টিতে সেই ফলনে ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর। জেলায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়েছে। পুজোর মুখে ওঠার কথা ছিল ফুলকপি ও বাঁধাকপির। কিন্তু সে সবই এখন জলের তলায়।