ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ ২৮ বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অজিত সেনগুপ্ত (প্রয়াত) একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তা পালন করে উঠতে পারেনি রাজ্য সরকার!
এই অবস্থায় বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বুধবার মন্তব্য করেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে ক্লাবের সংস্কৃতি চলছে। রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের এক কনস্টেবলের পাওনাগণ্ডা মেটানো সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি যখন এই মন্তব্য করছেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য ও অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত সেই সময় এজলাসে উপস্থিত। স্বরাষ্ট্রসচিবকে আদালতে দাঁড় করিয়ে রেখে বিচারপতি করগুপ্তের পরের মন্তব্য, ‘‘যত ক্ষণ না কেউ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন, তত ক্ষণ কিছুই করবে না প্রশাসন! বিচারপতিরা রায় দিয়ে অবসরজীবন কাটিয়ে মারা যাবেন। কিন্তু তাঁর নির্দেশ প্রশাসন মানবে না। এমনই চলতে থাকবে। তা-ই তো?’’
বিচারপতির এই মন্তব্যের জবাব দিতে পারেননি স্বরাষ্ট্রসচিব। তবে এজি কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘আদালত নির্দেশ দিলে তা মানতেই হবে।’’ অথচ ২৮ বছর আগে বিচারপতি অজিত সেনগুপ্ত (প্রয়াত) একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন, এখনও তা পালন করে উঠতে পারেনি রাজ্য!
এজি জানান, ওই নির্দেশ ‘রিভিউ’ বা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হলেও তার নিষ্পত্তি হয়নি। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন সেই পুরনো আর্জিপত্র ১৩ অগস্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরকে।
বর্ধমানের বাসিন্দা হাসিবর রহমান ১৯৮১ সালে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশে যোগ দেন। তাঁর আইনজীবী রঞ্জিতকুমার ঘোষাল জানান, ১৯৮২ সালে হাসিবরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত থাকার তথ্য গোপনের কথা জানায় স্বরাষ্ট্র দফতর। তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। ১৯৯০ সালে হাইকোর্টে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান হাসিবর। নিম্ন আদালতে ফৌজদারি মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার রায়ের প্রতিলিপিও মামলার নথিতে জুড়ে দেন। সেই বছরেই বিচারপতি অজিত সেনগুপ্ত হাসিবরকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার এবং তাঁর যাবতীয় বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। নানান টালবাহানার পরে হাসিবর চাকরি ফিরে পেলেও বকেয়া পাননি। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি কনস্টেবল হিসেবেই অবসর নেন। দু’বছর আগেই বকেয়া ও প্রোমোশন না-পাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি।