সবুজকলি সেন। ফাইল চিত্র
বক্তব্য না-শুনে একতরফা ভাবে সাসপেন্ড-এর চিঠি ধরানো হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন। তাঁর দাবি, “জ্ঞানত আমরা কোনও অন্যায় করিনি। আমাদের কোনও বক্তব্য না শুনে সম্পূর্ণ একতরফা ভাবে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন।” কলকাতা হাইকোর্ট খুললে এই নিয়ে মামলা দায়ের করার কথা জানিয়েছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। অরুণাভবাবু বলেন, “ঘটনাটি বিশদে জানার পরে সাসপেন্ড করার কোনও কারণ এক্ষেত্রে নেই বলে মনে হয়েছে। বরং মনে হয় ব্যক্তিগত ক্ষোভ চরিতার্থ করার উদ্দেশেই এই পদক্ষেপ। এই মামলায় নিশ্চিত ভাবেই জয়ী হব।”
বিশ্বভারতীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ভাবে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনকে সাসপেন্ড করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। একইসঙ্গে সাসপেন্ড করা হয় প্রাক্তন কর্মসচিব এবং প্রাক্তন ফিনান্স অফিসারকেও। এই ঘটনার পর থেকে নানা প্রশ্ন, কৌতূহলের শেষ নেই বিশ্বভারতীতে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সবুজকলি সেন যখন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন বিশ্বভারতীর শিক্ষা, উদ্ভাবনী শিক্ষা ও গ্রাম পুনর্গঠন বিভাগের অধিকর্তা ছিলেন। ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি অধিকর্তা হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তখনই উপাচার্য হিসেবেও মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তাই অধিকর্তা হিসেবে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয় ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বিকৃত করার অভিযোগ তুলে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর শো-কজ করা হয় এই তিন আধিকারিককে।
সবুজকলিদেবীর দাবি, শো-কজের উত্তরে ওই বছরেরই ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন কর্মসচিবের কাছে ১৭টি নথি দেখতে চান। তার একটি নথিও পাঠানো হয়নি বলে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের অভিযোগ। সবুজকলিদেবীর কথায়, ‘‘তাই স্বাভাবিক ভাবেই শো-কজের কোনও উত্তর দিতে পারিনি।’’ তাঁর আরও দাবি, কর্মসমিতির যে বৈঠকে নিয়েই মূল চর্চা, সেখানে মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছনো যায়নি। তাই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সাহায্য চাওয়া হয়। মন্ত্রকের তরফে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী উপাচার্য আসার আগে পর্যন্ত অথবা অবসর গ্রহণ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়।
এই নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিকের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের।