(বাঁ দিক থেকে) ফিরহাদ হাকিম এবং অর্জুন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
ভোটের পরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্দুকবাজদের তাণ্ডব, সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। সেই আবহে শনিবার কলকাতার অদূরে বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের সুর আরও চড়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম দাবি করলেন, বিজেপিই রাজ্য জুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইছে। বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে বঙ্গে দুষ্কৃতীদের ঢোকানো হচ্ছে। অস্ত্রও আসছে বিহার থেকে! ফিরহাদকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন বিজেপি নেতা তথা ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ। তাঁর বক্তব্য, এখন আর বিহারের মুঙ্গের থেকে এ রাজ্যে অস্ত্র আসে না। মেটিয়াবুরুজ, মালদহ, মুর্শিদাবাদেই এখন অস্ত্র কারখানা রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার জেরেই রাজ্যে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বাড়ছে বলে দাবি করেন অর্জুন।
সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ ও হাওড়ার ডোমজুড়ে ডাকাতির ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়েছে। তার মধ্যেই কলকাতার দু’জায়গায় গুলি চলেছে। একটি ঘটনা ঘটেছে গত রবিবার রাতে কসবায়। অন্যটি গত শুক্রবার পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার। এর পর শনিবার ভরদুপুরে বেলঘরিয়ায় ব্যস্ত বিটি রোডের উপরে চলন্ত গাড়িতে বসে থাকা ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ফিরহাদের দাবি, ডাকাতি, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে! বাইরের রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীদের এনে অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। ঘটনাচক্রে, রানিগঞ্জ ও হাওড়ায় ডাকাতির ঘটনা এবং বেলঘরিয়ার ঘটনায় ‘বিহার-যোগ’ প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমারা পুলিশকে আরও কঠোর হতে বলেছি। আরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে বলেছি। মুঙ্গের থেকে অস্ত্র ঢুকছে। নজরদারি রাখতে বলেছি পুলিশকে। বিহার থেকে অপরাধীরা এসে বিভিন্ন সোনার দোকানে ডাকাতি করছে। পুলিশকে বিষয়টি ভাল করে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
ফিরহাদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অর্জুন বলেন, ‘‘ববি হাকিমের পরিবারও তো ভিন্ রাজ্যের। এটা রাজ্য জুড়ে তোলাবাজির লড়াই। এখন আর মুঙ্গের থেকে অস্ত্র আসে না! মেটিয়াবুরুজ, মালদহ আর মুর্শিদাবাদে অস্ত্র কারখানায় অস্ত্র তৈরি হচ্ছে। পুলিশ লোক দেখানো দু’-একজনকে ধরে। প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্যই এখনও সুবোধ জেলে বসে ক্রাইম করে যাচ্ছে। এই সুবোধকেই মণীশ শুক্লকে খুন করার জন্য ভাড়া করেছিল তৃণমূলের নেতারা। তারা কী করে অপরাধীদের আটকাবে?’’
প্রসঙ্গত, বেলঘরিয়ায় যে ব্যবসায়ীর উপর হামলা হয়েছে, সেই অজয় মণ্ডল দাবি করেছেন, ঘটনার পর তাঁর কাছে হুমকি ফোন এসেছে। তাঁকে ফোন করছেন সুবোধ সিংহ নামে ব্যক্তি। তিনি বর্তমানে বিহারের জেলে বন্দি। অজয় বলেন, ‘‘সুবোধ সিংহ আমাকে ফোন করছে। আমি শুনেছি, ও এখন বিহারের কোন জেলে বন্দি। কী ভাবে ফোন করছে জানি না।’’