চোখ ছেঁড়া এবং হাত কাটার হুমকি দেওয়ায় তৃণমূলের যুবরাজ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করল বিজেপি। আজ, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইনের রাষ্ট্রে এ রকম বলা যায় না। অথচ অভিষেক এক জন সাংসদ হয়ে তা-ই বলেছেন। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।’’ রাহুলবাবুর আরও ব্যাখ্যা, ‘‘তৃণমূল হিংসাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমি মনে করছি, এই মন্তব্য বিজেপি-র প্রতিই করা হয়েছে। তৃণমূল বিজেপি-কে ভয় পাচ্ছে। সে জন্যই এই হুমকি!’’
বসিরহাটে সোমবার এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেবের নাম না করে তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে বাংলার মানুষকে চোখ দেখালে আমরা চোখ ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে দিতে পারি। হাত দেখালে হাত কেটে নিতে পারি।’’ এরই জেরে রাজ্য বিজেপি-র সম্পাদক কমল বেরিওয়াল মঙ্গলবার জোড়াসাঁকো থানায় অভিষেকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। বসিরহাটের বিজেপি কর্মীরাও একই বিষয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। রাহুলবাবুর কটাক্ষ, ‘‘অভিষেক যা বলেছেন, তৃণমূলের পক্ষে সেটাই স্বাভাবিক। ওদের তাপস পাল ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিলেন। তখন দল তাঁর পাশেই ছিল। সুতরাং, তৃণমূলের স্বভাবজাত মন্তব্যই অভিষেকের পক্ষ থেকে এসেছে!’’
অভিষেকের হুমকির প্রতিবাদ করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও বলেন, ‘‘মানবসভ্যতা অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। এখন আর চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত নেওয়ার কথা কেউ বলে না। এখন গণতন্ত্রের যুগ। কারও কোনও ব্যাপারে আপত্তি থাকলে তা গণতান্ত্রিক পথেই করতে হয়।’’ অভিষেকের কথার পিছনে অপরাধমূলক অভিসন্ধি আছে বলে অভিযোগ করে ইয়েচুরি আরও বলেন, ‘‘কাউকে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে যেমন শিক্ষা দেওয়া হয়, তিনি তেমন কথাই বলেন। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের নেতারা এখন প্রায়ই এই ধরনের কথা বলছেন। রাজ্যের মানুষের তাঁদের থেকে সতর্ক থাকা উচিত।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে যে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ রোপণ করেছেন, এ তারই বিষফল। বিরোধী বলে তো ওঁরা কিছু রাখতেই চাইছেন না।’’