প্রতীকী ছবি
ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়ার পথে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার পটমদার কাছে ধুসরা এলাকায় একটি পিক আপ ভ্যান উল্টে মৃত্যু হল এ রাজ্যের চার পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃত চার পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে তিন জনের বাড়ি পুরুলিয়া জেলায় ও অন্য এক জনের বাড়ি বাঁকুড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম নির্মল মাহাতো (৩৫), দুর্যোধন মাহাতো (২৮), কৃত্তিবাস মাহাতো (৩৩) এবং সঞ্জয় কর্মকার (৩০)। ঘটনায় আরও বেশ কয়েক জন আহত হয়ে ঝাড়খণ্ডের একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার সিন্দরি গ্রাম থেকে একটি পিক আপ ভ্যানে করে মোট ৩০ জন পরিযায়ী শ্রমিক ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। এই ৩০ জনের মধ্যে অধিকাংশের বাড়ি পুরুলিয়ার বরাবাজার থানা এলাকার সিন্দরি-সহ আশপাশের গ্রামে। পাঁচ জনের বাড়ি বাঁকুড়ার খাতড়া থানার বনতিল্লা গ্রামে। সন্ধ্যা ৬টার সময় জামসেদপুরের টাটানগর স্টেশন থেকে বিশাখাপত্তনমগামী ট্রেনে ওঠার কথা ছিল সকলের। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই শ্রমিকরা সকলেই বিশাখাপত্তনমে পাইপ রং করার কাজে যোগ দেওয়ার জন্য সেখানে যাচ্ছিলেন।
শুক্রবার বিকালে পুরুলিয়া থেকে ঝাড়খণ্ড সীমানায় প্রবেশের কিছু ক্ষণ পরেই পটমদার কাছে ধুরসা এলাকায় পিক আপ ভ্যানটি আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর উল্টে যায়। পিকআপ ভ্যান থেকে ছিটকে পড়েন ৩০ জন পরিযায়ী শ্রমিকই। স্থানীয় পুলিশ দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় পটমদা এমজিএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিন শ্রমিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসা চলাকালীন আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় মৃত নির্মল মাহাতো ও দুর্যোধন মাহাতোর বাড়ি পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার সিন্দরি গ্রামে। কৃত্তিবাস মাহাতোর বাড়ি বান্দোয়ান থানার বারুডি গ্রামে। মৃত সঞ্জয় কর্মকারের বাড়ি বাঁকুড়ার খাতড়া থানার বনতিল্লা গ্রামে। শনিবার সন্ধ্যায় মৃতদেহগুলি গ্রামে পৌঁছলে শোকের আবহ তৈরি হয় বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার ওই দু’টি গ্রামে ।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া পিক আপ ভ্যানটির যাত্রী মলয় মাহাতো বলেন, ‘‘২০১৭ সাল থেকে ভিন্ রাজ্যে কাজ করে আসছি। লকডাউনের সময় বাড়ি ফিরে আসি। সকলে মিলে ফের বিশাখাপত্তনমে কাজে যাচ্ছিলাম। এমনটা হবে দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।’’
পুরুলিয়ার মানবাজারের মহকুমাশাসক শুভজিৎ বসু বলেন, ‘‘আমরা সর্বতো ভাবে পরিবারগুলির পাশে আছি।’’ বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফেও মৃত ও আহত পরিবাররগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ।