ভোট মিটে গিয়েছে। তবু দাঁড়ি পড়ছে না ভোট-হিংসায়। কোথাও আক্রান্ত হচ্ছেন জোট প্রার্থী, কোথাও আবার গুলিবিদ্ধ জোটের হয়ে প্রচার চালানো বাম কর্মী। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।
শুক্রবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে হামলার মুখে পড়েন ওই কেন্দ্রের জোট প্রার্থী সিপিআইয়ের মাখনলাল নায়েক-সহ জনা কুড়ি বাম ও কংগ্রেস নেতা-কর্মী। গত ৫ মে এই
জেলায় ভোট মিটেছে। তারপর পটাশপুরের নানা এলাকায় তৃণমূলের লোকজন জোট প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ও বাম কর্মীদের মারধর করছিল বলে অভিযোগ। এ দিন আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যান মাখনবাবুরা।
অভিযোগ, ট্রেকারে চকগোপাল গ্রামে যাওয়ার সময় দোলমোড়ের কাছে জনা ষাটেক তৃণমূল কর্মী তাঁদের পথ আটকায়। মাখনবাবু ছাড়াও মারধর করা হয় সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত পণ্ডা, কংগ্রেস নেতা শঙ্কর বল্লভ, প্রদীপ মান্নাকে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। মাখনবাবু বলেন, ‘‘ওরা ট্রেকারে আগুন লাগানোর চেষ্টাও করে। কোনওমতে বেঁচে ফিরেছি।’’
বিরোধীদের মতে, এ বার আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মানুষ নিজের ভোট দিতে পেরেছে। আর তাতেই জয় নিয়ে সংশয়ে তৃণমূল শিবির। ভোটের ফলপ্রকাশের দিন যত এগোচ্ছে, সেই সংশয়ের মাত্রা বাড়ছে। সেই টানাপড়েনেই হচ্ছে হামলা। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির কথায়, ‘‘ভোটে হার নিশ্চিত জেনেই এ সব করছে তৃণমূল।’’ পটাশপুরের তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতির্ময় করে অবশ্য দাবি, ‘‘হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।
উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় আবার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জোটের হয়ে প্রচার চালানো স্থানীয় সিপিএম কর্মী আহমেদ আলি মণ্ডল। বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার চা দোকানের কাছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তিনটি গুলি লাগে আহমেদের। তিনি কলকাতায় চিকিৎসাধীন। অভিযোগ, ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে এসেছিলেন আহমেদ।
জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচারও চালিয়েছিলেন। সেই আক্রোশেই তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছে। তবে তৃণমূলের দাবি, পারিবারিক বিবাদেই এই হামলা। ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের মাধবডিহি থানার কামারহাটিতে সিপিএমের এক বুথ এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর হুগলির খানাকুলে বৃহস্পতিবার রাতে এক বিজেপি কর্মীর মিষ্টির দোকানে হামলা চালানো হয়। এখানেও অভিযুক্ত তৃণমূল। বাধা দেওয়ায় ওই বিজেপি কর্মীর মাকেও রেয়াত করা হয়নি। লাঠির ঘায়ে তাঁর মাথা ফেটেছে। এই ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মীকে ধরেছে পুলিশ। যদিও তৃণমূলের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।