কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, ভোট নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপে সর্বোচ্চ দু’মিনিটের ভিডিয়ো আপলোড করা যাবে। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে নতুন একটি অ্যাপ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ‘সি-ভিজিল’ নামে ওই অ্যাপটিতে ভোট চলাকালীন অভিযোগ জানাতে পারবে আমজনতা। কমিশন চায়, অ্যাপটির বিষয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার করা হোক। কিন্তু এ রাজ্যে সেই প্রচারের কাজে ঘাটতি রয়েছে বলেই অভিমত তাদের। শনিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে রাজ্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও) দফতরের কর্তাদের বৈঠকে ঘুরেফিরে সেই প্রসঙ্গ ওঠে।
কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, ভোট নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপে সর্বোচ্চ দু’মিনিটের ভিডিয়ো আপলোড করা যাবে। জিয়োগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেমের (জিআইএস) মাধ্যমে অভিযোগকারীর অবস্থান চিহ্নিত হয়ে যাবে। একটি ইউনিক আইডি-ও পাবেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ চলে যাবে জেলা কন্ট্রোল রুমে। সেখানে তথ্য যাচাইয়ের জন্য থাকবে ফিল্ড ইউনিট। ওই ইউনিটে থাকবেন ফ্লাইং স্কোয়াড, স্ট্যাটিক নজরদারি, রিজার্ভ টিমের সদস্যরা। অভিযোগ যাচাইয়ের পরে বিষয়টি পাঠিয়ে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে। তিনি অথবা রিটার্নিং অফিসার অভিযোগ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে জেলা প্রশাসন। আবার কিছু ক্ষেত্রে এফআইআর করার প্রয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা নির্বাচনের কমিশনের ‘ন্যাশনাল গ্রিভান্স পোর্টালে চলে যাবে।
দু’টি ক্ষেত্রেই কী পদক্ষেপ করা হল একশো মিনিটের মধ্যে তা জানাতে পারবেন অভিযোগকারী। অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপনই থাকবে। তবে অ্যাপটিতে আগে থেকে রেকর্ড করা কোনও ছবি বা ভিডিও পাঠানো যাবে না।
কমিশনের ব্যাখ্যা, ভোট পর্বে কোথায় কী ঘটনা ঘটছে, তা দ্রুত জানার জন্যই এই অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে তা ব্যবহার করতে হবে তা যদি সাধারণ মানুষকে জানানো না হয়, তা হলে অ্যাপটিই অর্থহীন হয়ে পড়বে। ‘সি-ভিজিল’ নিয়ে প্রচারের ‘ঘাটতি’র পিছনে দু’টি ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। কারও মতে, প্রচার বেশি হলে অভিযোগের মাত্রা বাড়তে পারে। তাতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির ‘অসুবিধা’ হতে পারে। আবার কেউ বলছেন, অভিযোগ বেশি জমা পড়লে সমাধান করতেও সময় বেশি দিতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
কমিশন অবশ্য অ্যাপ নিয়ে প্রচারে কোনও রকম শিথিলতা বরদাস্ত করতে নারাজ। এ দিন সাত ঘণ্টার বৈঠকে এক ঘণ্টাই খরচ হয়েছে ‘সি-ভিজিল’ নিয়ে আলোচনায়। জেলাশাসকদের অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছেন কমিশন কর্তারা।
এ দিনের বৈঠকে ইভিএম-ভিভিপ্যাটের স্ট্রং রুমে নজরদারি নিয়ে জেলাশাসকদের আরও বেশি সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। অতীতের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাও চিহ্নিতকরণে গুরুত্ব পাবে।