Dengue

জল না সরালে বাড়বে রোগ

পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই বৃষ্টিতে বাড়ির ভিতরে বা ছাদে, মাঠে, চাষের খেতে বা রাস্তার ধারে— বিভিন্ন জায়গায়  পরিষ্কার জল জমে থাকার সম্ভাবনা তৈরি হবে। আর ওই জলই ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই এবং ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই মশার আঁতুড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৩
Share:

একেই দুর্যোগে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গ। তার উপরে লাগাতার বৃষ্টিতে নতুন করে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, এনসেফালাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল।

Advertisement

পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই বৃষ্টিতে বাড়ির ভিতরে বা ছাদে, মাঠে, চাষের খেতে বা রাস্তার ধারে— বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার জল জমে থাকার সম্ভাবনা তৈরি হবে। আর ওই জলই ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই এবং ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই মশার আঁতুড়। ধান খেতের জমা পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে এনসেফালাইটিসের জীবণুবাহক মশা কিউলেক্স বিষ্ণোই। ফলে বৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পরে যেখানে যেখানে পরিষ্কার জল জমে থাকবে, সেখানেই মশা ডিম পাড়বে বলে জানাচ্ছেন স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এক অবসরপ্রাপ্ত পরজীবী বিজ্ঞানী। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘মেঘলা আকাশ, নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় মশার ডিম্বাণু দ্রুত পরিণত হয়। ফলে বংশবিস্তারের হার বাড়ে। তাপমাত্রা বাড়লে ডিম পাড়ার হার অনেকটাই কমে যায়। তাই যত দিন আকাশ মেঘলা থাকবে তত দিন মশার বংশবিস্তারের হার বাড়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।’’

এক পতঙ্গবিদ জানাচ্ছেন, এত দিন ধারণা ছিল এডিস মশা কেবল মাত্র চার দেওয়ালের মধ্যে জমে থাকা পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে। কিন্তু সেই ধারণার বদল হয়েছে। দেখা গিয়েছে, এডিস মশাও চার দেয়ালের বাইরে জমে থাকা পরিষ্কার জলেও ডিম পাড়ছে। ফলে বাড়ছে ডেঙ্গি সংক্রমণের আশঙ্কাও।

Advertisement

রাজ্যের যে সব এলাকা ডেঙ্গি-সহ অজানা জ্বরের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে, এ বারের বৃষ্টিটা হচ্ছে মূলত সেই দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা ও হাওড়াতেই। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই সব এলাকায় ডেঙ্গির উপসর্গ-সহ এক ধরনের জ্বর ছড়াচ্ছে দ্রুত। রোগ ধরা না পড়লেও কোথাও-কোথাও ৪-৫ দিনের মধ্যে মৃত্যুও ঘটছে। সেটাই উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে আরও।

মশা মারা এবং মশার বংশবৃদ্ধি রোধ নিয়ে পুরসভাগুলির এখনও হেলদোল নেই। ঘাটতি যেমন সচেতনতার প্রচারে, তেমনই রোগ প্রতিরোধে পুরসভা কিংবা স্বাস্থ্য দফতরের সক্রিয়তাও সে ভাবে নজরে পড়ছে না। এর উপরে রোগ সংক্রমণের খবর চেপে রাখার প্রবণতায় সমস্যা আরও বাড়ছে বলে মনে করছেন পরজীবী বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ। তাঁরা বলছেন, কোথায় কোন রোগ কতটা ছড়াল, তা জানতে পারলে সংশ্লিষ্ট রোগ নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে পুরসভা বা জেলা স্বাস্থ্য দফতরগুলি। কিন্তু বহু এলাকাতেই ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশনে ডেঙ্গি লিখতেও নিষেধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। আর এই তথ্য চাপার জন্য রাজ্যে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া কিংবা অন্য সংক্রামক রোগের প্রকৃত চিত্রটা অজ্ঞাতই থেকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এক পরজীবী বিজ্ঞানী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement