প্রতীকী ছবি।
ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে তাঁরা জয়ী। সেই জয়ীরাই হার না মানার পাঠ দেবেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্তদের। সংক্রমণ নিয়ে ভীতি-ছুঁৎমার্গের সঙ্গে লড়াইয়ে কলকাতা-সহ জেলাস্তরে এমনই ‘কোভিড যোদ্ধা’দের দল গড়ছে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে সামনের সারির যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে আগামী, বুধবার চিকিৎসক দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত সাড়ে তিন মাসে চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা বলছে, সংক্রমণের সঙ্গে লড়াইয়ে অন্যতম প্রতিকূলতা, করোনা ভাইরাসকে ঘিরে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ভীতি। যার প্রেক্ষিতে কখনও রোগী প্রত্যাখ্যানের ঘটনা ঘটছে, কখনও পাড়ায় একঘরে করে রাখা হচ্ছে রোগী এবং তাঁর পরিবারকে এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীকেও। এ দিকে, মাত্র ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে ৬০০-র ঘরে ঢুকে পড়েছে। এ দিন গত ২৪ ঘণ্টায় সারা রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬২৪। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
এই পরিস্থিতিতে করোনা-মুক্তদের ‘করোনা যোদ্ধা’ হিসেবে কোভিড হাসপাতালে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কোভিড থেকে যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁরা হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে কথা বলা, খাবার দেওয়া, হাসপাতালের বিভিন্ন কাজে সহায়ক হিসাবে কাজ করবেন। রোগীর পরিজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলানো, তাঁদের ভরসা দেওয়ার কাজ করবেন কোভিড যোদ্ধারা।’’
আরও পড়ুন: আক্রান্ত বাড়লেও মৃত্যুর হার কমানোর দিকে জোর কলকাতায়
প্রাথমিক ভাবে বহরমপুর থেকে এই পরিকল্পনার সূচনা হচ্ছে। পরে সব জেলাতেই এ ধরনের দল গঠন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কাউন্সেলিং করে বহরমপুরে ৬০ জন কোভিড যোদ্ধার একটি দল তৈরি হয়েছে। ৬০ জনের মধ্যে ১০ জন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, ১০ জন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ এবং ৪০ জন কলকাতায় কাজ করতে রাজি হয়েছেন। তাঁদের প্রতি দিনের পারিশ্রমিক দেওয়ার পাশাপাশি আনুষঙ্গিক খরচ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কেন বন্ধ অন্য রোগের চিকিৎসা, বিক্ষোভ জুনিয়র ডাক্তারদের
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে থেকে এই পরিকল্পনার গোড়াপত্তন হয়। এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগের প্রধান সৌমিত্র ঘোষ জানান, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের রক্তরস অন্যদের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হচ্ছে। কারণ, তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ দেওয়ার জন্য লোকবল প্রয়োজন। ভীতি কাটিয়ে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে করোনা যোদ্ধারাই পথ দেখাবেন।’’