কংগ্রেসের বৈঠকে শুভঙ্কর সরকার, অম্বা প্রসাদ ও গুলাম আহমেদ মীর। বিধান ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকে নজর রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করার পরামর্শ দিলেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক গুলাম আহমেদ মীর। তাঁর বার্তা, ২০২৬-এর ভোটে রাজ্যের কোন কোন আসনে কংগ্রেস লড়াই দিতে পারবে, তা চিহ্নিত করে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা হোক। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হোক সংগঠনেও।
রাজ্যে সদ্য ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। সেখানে বামেদের হাত ছেড়ে এ বার একাই লড়েছিল কংগ্রেস। কোচবিহারের সিতাই আসনে তাদের ভোট বাড়লেও বাকি পাঁচটি কেন্দ্রেই ফলাফল হয়েছিল শোচনীয়। এর পরে, বিধান ভবনে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস এবং দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে এসেছিলেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক মীর। প্রথমে জেলা সভাপতি ও তার পরে প্রদেশ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে তাঁর আলাদা করে বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানেই মীর ঝাড়খণ্ডের সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের উদাহরণ টেনে জানান, সে রাজ্যে কংগ্রেস যেমন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল, তেমনই নিজেদের জায়গাগুলিতে সংগঠনের উপরে জোর দিয়েছিল। সে ভাবেই বাংলাতেও সংগঠনের ফাঁকফোকর মজবুত করার দিকে নজর দিতে হবে। সব আসনে কংগ্রেস যদি লড়াই করার মতো জায়গায় না থাকে, তা হলে যে যে আসনগুলিতে লড়তে পারবে সেগুলি চিহ্নিত করে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা হোক। তার পরে বাকি কথা বুঝে নেওয়া যাবে।
বৈঠকে কংগ্রেস নেতাদের একাংশ যেমন সংগঠন শক্তিশালী করার কথা বলেছেন, তেমনই ২০২৬-এর কথা মাথায় রেখে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষেও কেউ-কেউ সওয়াল করেছেন। বৈঠক চলবে, আজ, রবিবারও। দ্বিতীয় দিনে, দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে মীরের বৈঠক হওয়ার কথা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদলের পরে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক মীর এ বারেই প্রথম এমন পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে বসলেন। তাঁকে এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে উপস্থিতি ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। পরে মৌলালির মোড় থেকে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবন পর্যন্ত মিছিল করে মীরকে স্বাগত জানান দলের নেতা-কর্মীরা।
জেলা সভাপতিদের সবাই এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না। সূত্রের খবর, তা নিয়ে কিছুটা উষ্মাও প্রকাশ করেছেন মীর। বৈঠকে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং দলের বেশ কয়েক জন প্রাক্তন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। মীরের সঙ্গেই এ দিন ছিলেন বাংলার সহ-পর্যবেক্ষক তথা এআইসিসি-র দুই সম্পাদক, ওড়িশার আসফ আলি খান এবং ঝাড়খণ্ডের অম্বা প্রসাদ।