ফাইল চিত্র।
থাকার কথা ৭২ জন। জানুয়ারির শেষে ছিলেন ৩২ জন। চলতি মাসের গোড়ায় দু’জন অবসর নিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার অবসর নিচ্ছেন আরও এক জন। মাত্র ২৯ জন বিচারপতি নিয়ে কার্যত নাজেহাল দশা কলকাতা হাইকোর্টের।
হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, কেন্দ্রের বঞ্চনার জেরেই অর্ধেকের বেশি বিচারপতির পদ খালি রাজ্যে। অথচ হাইকোর্টে ২ লক্ষেরও বেশি মামলা জমে রয়েছে। নাকাল হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামতে চলেছে বার অ্যাসোসিয়েশন। আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে আগামিকাল, শুক্রবার অ্যাসোসিয়েশনের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে বুধবার থেকে হাইকোর্টে তিন দিনের অবস্থান বিক্ষোভও শুরু করেছে তৃণমূলের আইনজীবী সেল। যদিও বঞ্চনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাইকোর্টে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ।
বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তম মজুমদার বুধবার জানান, গত দু’বছরে হাইকোর্ট থেকে ১৫ জনেরও বেশি বিচারপতি অবসর নিয়েছেন। সেই জায়গায় বিচারপতি নিযুক্ত হয়েছেন মাত্র ছ’জন। শুক্রবার থেকে যে ২৯ জন বিচারপতি থাকবেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনকে আবার পর্যায়ক্রমে আন্দামানে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে যেতে হবে। ফলে এক দিকে মামলার নিষ্পত্তি হতে যেমন সময় লাগছে, তেমনই কর্মরত বিচারপতিরাও আইনজীবীদের আবেদন মেনে জরুরি ভিত্তিতে কোনও মামলার শুনানি করতে রাজি হচ্ছেন না। কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে উত্তমবাবু বলেন, ‘‘এই সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য একাধিক বার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি এখনও সময় দেননি। সময় দেননি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিও।’’
হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে জনস্বার্থে মামলাও হয়েছে। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানিতে কৌশিক চন্দ বলেছেন, ন্যাশনাল জুডিশিয়াল কমিশন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলায় কেন্দ্র হেরে গিয়েছে। তার পরে কেন্দ্র নীতিগত ভাবে বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের উপরেই ছেড়ে দিতে চায়। হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি হওয়ার যোগ্য ২০ জন আইনজীবীর নাম সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছে। তা বিবেচনা করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রশ্নই ওঠে না। সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রককে নতুন বিচারপতিদের নাম জানালে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’ রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘বিচারপতি নিয়োগ আদালতের এক্তিয়ার। আমি মন্তব্য করব না।’’