দিলীপ ঘোষ ও কুণাল ঘোষ। ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ করে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। এ বার তা নিয়ে বাগযুদ্ধে জড়ালেন রাজ্য রাজনীতির দুই ঘোষ— দিলীপ ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল। সংবাদমাধ্যমে দিলীপ নিজের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সুর আরও চড়িয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘দম থাকলে দিলীপ ঘোষকে অ্যারেস্ট করে দেখুক, তার পর দেখবে বিজেপি কী জিনিস!’’ পাল্টা তৃণমূলের কুণালের দাবি, দিলীপকে গ্রেফতারির দাবিই তো তোলা হয়নি। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘হাওয়ায় তরবারি চালানো বন্ধ করুন দিলীপ!’’
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে দিলীপ মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। স্মারকলিপিতে দিলীপকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন ব্রাত্য বসু, কাকলি ঘোষদস্তিদার, সাজদা আহমেদ, কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজারা। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দিলীপ তুমুল আক্রমণ করেন রাজ্যের শাসক শিবিরকে। দিলীপ দাবি করেন, রাজ্যপালের কাছে তাঁকে গ্রেফতারির দাবি জানিয়ে এসেছেন তৃণমূল নেতারা। তার পরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি বলেন, ‘‘যে গভর্নরকে সকাল-সন্ধ্যা অপমান করছে, তাঁর পায়ে পড়ছে দিলীপ ঘোষকে অ্যারেস্ট করানোর জন্য! আরে, আমি তো রাস্তায় আছি, এখানে পুলিশ পাঠাও, অ্যারেস্ট করো দম থাকলে। নিকম্মার দল যত! কোনও দম নেই এদের।… দিলীপ ঘোষের দম আছে চোখে আঙুল দেওয়ার, তাই দিয়েছি। দরকার হলে চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে বলব, ভবানীপুরে গিয়ে বলব। চোরকে চোর বলব, ডাকাতকে ডাকাত বলব, মিথ্যাবাদীকে মিথ্যাবাদী বলব। দম থাকলে আমাকে অ্যারেস্ট করো, তার পর দেখবে বিজেপি কী জিনিস!’’ কার্যত একই রকম বক্তব্য নিজের নেটমাধ্যমের পাতায়ও দিয়েছেন দিলীপ।
এর প্রতিক্রিয়ার জন্য আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে। কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দিলীপ হাওয়ায় তরবারি চালাচ্ছেন। রাজ্যপালের কাছে তাঁকে গ্রেফতার করার কোনও দাবি করা হয়নি। তাহলে দিলীপ লাফাচ্ছেন কেন! আসলে গ্রেফতার হয়ে হিরো হতে চাইছেন। ওঁর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই, তাই লুজ টক করছেন। আমরা ওঁর লুজ টক থামাতে চেয়েছি। রাজ্যপালকে বলেছি, দিলীপ এ রকম অসভ্যের মতো কথা বলছেন, ওঁকে বারণ করে দিন। আপনি নিজে নিন্দা করুন। রাজ্যপালকে গ্রেফতারির দাবি জানাতে যাব কেন? আমরা গ্রেফতারি চাই না, আমরা চাই রাজভবনের গেটে দিলীপ কান ধরে দাঁড়িয়ে আছেন, সেটা দেখতে।’’
সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে দিলীপের মন্তব্যের জেরে তৈরি হওয়া উত্তাপ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।