হল না বৈঠক। লাগদা গ্রামের কমিউনিটি হলে। নিজস্ব চিত্র
৬০ ফুট বাই ২০ ফুটের ঘর। দেওয়ালে গেরুয়া কাপড়ের আচ্ছাদন। তার উপরে টাঙানো রয়েছে ঋষি অরবিন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ক্ষুদিরাম বসু, ভগৎ সিংহ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি। ঘরের এক কোণে ছোট্ট মঞ্চে চেয়ার পাতা। ৪-৫ দিন ধরে এমন ভাবেই সেই ঘর সাজানোর পরে শেষে হতাশই হতে হল বিজেপি কর্মীদের।
তারাপীঠে পুজো দিতে এসে কড়কড়িয়া গ্রাম লাগোয়া সরস্বতী শিশুমন্দিরের ওই ঘরেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেই ঠিক ছিল। কিন্তু বৈঠক না হওয়ায় দৃশ্যতই হতাশ হলেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের অনেকের আশা ছিল, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের কর্মী-নেতাদের মনোবল বাড়াতে কিছু টোটকা দিয়ে যাবেন সর্বভারতীয় সভাপতি।
এ দিন কড়কড়িয়া শিশুমন্দির স্কুলের মাঠে হেলিকপ্টারে পৌঁছনোর পর সাঁইথিয়া-রামপুরহাট সড়ক দিয়ে তারাপীঠ মন্দিরের দিকে রওনা দেন অমিত। সেই রাস্তার ধারেই তৃণমূলের রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক কার্যালয়। সকালে জনাদশেক দলীয় কর্মী বসেছিলেন সেখানে। তাঁরা জানান, অমিত শাহ সুষ্ঠু ভাবে পুজো দিতে পারেন সে দিকে নজর রাখতে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেলা ১২টা নাগাদ সরস্বতী শিশুমন্দিরে ফেরেন অমিত। সেখানে তাঁর অপেক্ষায় ছিলেন জেলা কমিটি থেকে মণ্ডল সভাপতি, প্রাক্তন জেলা সভাপতি, ৭ মোর্চার সভাপতি থেকে পুরসভার সদস্যেরা। অমিত অবশ্য কারও সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। সকলকে হাত জোড় করে নমস্কার করেন। কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরের নেতারা সেখানে হাজির সবাইকে জানান, পুরুলিয়ার সভার জন্য দুপুরের খাবার খেয়েই রওনা দেবেন অমিত শাহ। এর পরেই তিনি চলে যান শিশুমন্দির স্কুলের একটি ঘরে। সেখানে দলের মহিলা কর্মীরা খাবার পরিবেশন করেন। তখনই নামে বৃষ্টি। তার মধ্যেই বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুরুলিয়ার দিকে রওনা দেয় বিজেপি শীর্ষেনতার কনভয়। অমিত শাহ এলেন, পুজো দিলেন তারাপীঠে কিন্তু হল না বৈঠক— তাই কিছুটা হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরলেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। কার্যত হতাশ হয়েই তাঁরা বলেন, ‘‘এত দিন জানা ছিল কর্মীদের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করবেন অমিতজি। সেই মতো আমন্ত্রিতরা সময়ে হাজির হয়েছিলেন কিন্তু বৈঠকই হল না।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এ দিন এখানে বৈঠক হওয়ার কথাই তো ছিল না! হবে কি করে?’’
অমিতের সফর নিয়ে টিপ্পনি কেটেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘হেলিকপ্টার থেকে নেমে দেখলেন রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই জেলায় আর কিছু উনি বলেননি।’’