চাষবাস নিয়ে চর্চা চলছে কলেজের ক্যাফেটেরিয়ায়।
বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় কৃষি যে কতটা ‘কুল’ হতে পারে তা এক ঝলকেই বোঝা যায় বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে। স্মার্ট ক্লাসরুমে পড়াশোনা, ডিজিটাল লাইব্রেরি, অডিটোরিয়াম, হস্টেলে ওয়াই-ফাই জোন, এলইডি টিভি, ফ্রিজ, জিমন্যাসিয়াম— এক কথায় ১২৬৬ হেক্টরের ক্যাম্পাসে পড়াশোনার যাবতীয় আধুনিক উপাদান মজুত রয়েছে।
কৃষি, কৃষি ইঞ্জিনিয়ারিং ও উদ্যান পালন— তিনটি শাখায় পঠনপাঠন, গবেষণা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং গবেষণার জন্য অনলাইনে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্য, দেশ তো বটেই, আফগানিস্তান, নাইজিরিয়া থেকে পড়ুয়ারা আসছেন। নতুন আন্তর্জাতিক হস্টেল তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসে।
• পড়ুয়া ১১৩৪ • স্থায়ী শিক্ষক ২৪২ • শূন্য পদ ১০০টি • গ্রন্থাগার ১টি
কৃষি এবং উদ্যানপালন—এই দু’টি শাখায় কৃতীদের তালিকা বেশ দীর্ঘ। সম্প্রতি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ভাল ফলে নজির গড়েছে। গেট (গ্র্যাজুয়েট অ্যাপিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং)-এ প্রথম হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তৃতীয় স্থানাধিকারীও বিশ্ববিদ্যালয়ের।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, পঠনপাঠন-গবেষণার পাশাপাশি কৃষি প্রযুক্তিকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কাছে আরও বেশি ছড়িয়ে দেওয়াই লক্ষ্য। সেই জন্য বিসিকেভি ইতিমধ্যেই পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণা পর্ষদ এবং ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে। বিসিকেভি-র মূল ক্যাম্পাসে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (আরএআরসি) গড়ে উঠেছে। কেন্দ্রটি চিরসবুজ বিপ্লবের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পূর্ব ভারতে নেতৃত্ব দেবে বলে স্থির হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক দেবব্রত বসু জানান, সেই উদ্দেশ্যে আগেই আরএআরসি-র মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক চাষের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। লাল ল্যাটেরাইট অঞ্চল (পশ্চিমাঞ্চল), তরাই অঞ্চল (উত্তরবঙ্গ), নব পাললিক অঞ্চল (মধ্য ও পূর্বাঞ্চল) এবং উপকূলীয় লবণাক্ত অঞ্চলের (উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর) জন্য আলাদা আলাদা চাষ, পৃথক কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তুলনামূলক পিছিয়ে পড়া জেলা যেমন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে পরীক্ষামূলক ভাবে বিকল্প চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে। খরিফ পেঁয়াজ, রাঙা আলু, ট্যাপিওকা, কাজু চাষে সাফল্যও এসেছে। আয়লা বিধ্বস্ত সুন্দরবনে নুন সহনশীল ধান চাষে সাড়া মিলেছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। পানচাষিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছে শেড নেট পদ্ধতির ব্যবহার।
এত কিছুর পরেও প্রান্তিক চাষিরা প্রথাগত চাষ থেকে বেরোতে পারেননি। দক্ষিণবঙ্গের গাঙ্গেয় পলিমাটি অঞ্চলের জেলাগুলিতে তাই অর্থকরী সব্জি-ফল-ফুল যেমন ব্রকোলি, কলা, পেয়ারা, আম, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস চাষে জোর দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। নদিয়ার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকেরা রজনীগন্ধা, গাঁদার চাষ করছেন। দক্ষিণবঙ্গে ডাল চাষে আগ্রহ বেড়েছে বিসিকেভি-র উৎসাহে।
পরমাণু প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন নিয়ে গবেষণা চলছে। পেঁয়াজ, আলু-সহ নানা সব্জি, আম-লিচুর উপরেও চলবে এই গবেষণা। এর সফল প্রয়োগে ফল বা ফসলের পচনশীলতা যেমন ঠেকানো যাবে, তেমনই জল দূষণ, মাটি দূষণেও পরমাণু প্রযুক্তি সাহায্য করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে আবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। একশো শয্যার ওই কেন্দ্রে কৃষকেরা হাতে-কলমে কৃষি প্রযুক্তির পাঠ নিতে পারবেন। তবে তা তফসিলি জনজাতির জন্যে সংরক্ষিত।
কৃষি প্রযুক্তিকে আরও সম্প্রসারিত করতে বর্ধমান সদর ও বাঁকুড়ার শুশুনিয়াতে বিসিকেভি-র দু’টি ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছে। উপাচার্য জানালেন, বর্ধমান ক্যাম্পাসে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। আর ১৫-’১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাঁকুড়ার ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন শুরু হয়ে যাবে।
সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।
সিভি লিখুন যত্নে সাজিয়ে
চাকরির আবেদনে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল কারিকুলাম ভাইটে বা সিভি। চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতার সংক্ষিপ্ত রূপরেখা। প্রথম সিভি লেখা হয়েছিল সম্ভবত ৫০০ বছর আগে। লিখেছিলেন জগৎ বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দি ভিঞ্চি। তখন শিল্পীর বয়স ত্রিশ, তখনও মোনালিসা এঁকে বিখ্যাত হননি তিনি। কী কী করতে পারেন জানিয়ে মিলানের ডিউককে লম্বা একটি চিঠি লিখেছিলেন শিল্পী। নিজেকে ‘সেল’ করাটাও যে একটা আর্ট, বিলক্ষণ বোঝা যায় চিঠিটি পড়লে। সিভি বানানোর সময় সবার আগে মাথায় রাখতে হবে এই কথাটা। চাকরিদাতার েযন মনে হয়, আপনিই নির্দিষ্ট ওই পদের জন্য আদর্শ প্রার্থী।
মনে রাখতে হবে এটাও, সিভি পড়ে বাছাই করার কাজটা বেশিরভাগ সময় অফিস টাইমের বাইরে হয়। বাছাইকারী সেই সময় হয়তো আড্ডায় বসতেন কিংবা ছেলেকে পড়াতেন। তাই অপরিষ্কার, অগোছালো সিভি বাতিল হতে বেশি সময় লাগে না। বাচ্চাদের খাওয়ানোর মতো কেটে কেটে ‘সহজপাচ্য’ করুন নিজের সিভি। বুলেট, ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে এমন ভাবে ভাগ করুন, যাতে সহজেই পড়া যায়। প্রথমেই ‘পার্সোনাল ডিটেলস্্’। মানে নিজের নাম, ঠিকানা, যোগাযোেগর উপায়। বয়স, বিবাহিত কিনা উল্লেখ না থাকলেও চলবে। বিচিত্র নামে ( ডেডলি বয়, হট বেব) অনেকের ই-মেল অ্যাড্রেস হয়। সিভি বাতিল হওয়ার জন্য অদ্ভুত, অপেশাদার ই-মেল অ্যাড্রেস যথেষ্ট। নাম বা পদবী দিয়ে ই-মেল অ্যাড্রেস দিন। যদি আগে কোথাও চাকরি করে থাকেন, তাহলে সিভিতে তা উপরের দিকে থাকা ভাল। ়যাঁরা নতুন কাজের জগতে, জোর দিন শিক্ষাগত যোগ্যতায়। সাম্প্রতিকতম দিয়ে শুরু করুন। শেষ করুন স্কুলের তথ্য দিয়ে। হবি হিসাবে সিনেমা দেখা, বেড়ানোর কথা না বলে অমুক সিনে ক্লাবের মেম্বার, দল বেঁধে সম্প্রতি ইউরোপ বেড়িয়ে এলাম বলা ভাল। চাকরির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন হবি (সাংবাদিকতার জন্য আবেদন করলে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বা ক্যুইজ) উল্লেখ করাটা বুদ্ধিমানের।
সিভির দৈর্ঘ্য কতটা হবে, তা নিয়ে অনেকে চিন্তায় পড়ে যান। নির্দিষ্ট কোনও বিধি না থাকলেও মোটের উপর সিভি এ-ফোর কাগজে দু’পাতার হলেই ভাল। তার চেয়ে বেশি হলে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে পারে, কম হলে উহ্য রয়ে যেতে পারে আপনার সম্পর্কে জরুরি তথ্য।