স্কুলের ছাত্রীদের হাতে চকোলেট দিতে গিয়েই বিপত্তি ডেকে আনেন বোলপুরের ভুবনডাঙা গ্রামের সাইদুল রহমান। বুধবার তাঁকে ও তাঁর গাড়ির চালককে আটকে রাখেন আউশগ্রামের আকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে আইসি-সহ পুলিশকর্মীদেরও দীর্ঘক্ষণ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাইদুল ও তাঁর গাড়ির চালক সূর্যকান্ত ভুঁইঞার বিরুদ্ধে অপহরণের চেষ্টার মামলা রুজু করে। এ ছাড়া আউশগ্রাম থানার আইসি শুভময় বণিক স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশকে আটকে রাখা ও ধস্তাধস্তির মামলা রুজু করেন। সাইদুলদের বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর করা হয়। তবে পুলিশকে হেনস্থার মামলায় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইদুলের বাবা মতিয়ার রহমান বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ছিলেন। সাইদুল দিল্লিতে একটি বহুজাতিক পর্যটন সংস্থায় চাকরি করেন। প্রত্ন ও টেরাকোটা বিষয়ে আগ্রহ থাকায় তিনি বিভিন্ন জায়গায় ছবি তুলে বেড়ান। মঙ্গলবার সেই আগ্রহেই আউশগ্রামের মৌক্ষীরা গ্রামে একটি মন্দিরের ছবি তোলেন। সেই সময়ে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক স্কুলের টিফিন হয়। তিনি নবম শ্রেণির একটি মেয়ের হাতে এক প্যাকেট চকোলেট তুলে দেন। সেই প্যাকেটের উপরে চিনা ভাষায় কিছু লেখা ছিল। মেয়েটি প্রধান শিক্ষককে চকোলেটের বাক্সটি দেখালে তিনি তা খেতে বারণ করেন। প্যাকেটটি পুড়িয়েও দেওয়া হয়। এলাকায় এই খবর জানাজানি হওয়ার পরে গ্রামবাসীর ধারণা হয়, ছাত্রীদের অপহরণের উদ্দেশ্যেই চকোলেট দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাইদুলরা ফের ওই রাস্তা দিয়ে মৌক্ষীরা গ্রাম পেরিয়ে আকুলিয়া যেতেই কয়েক জন গ্রামবাসী তাঁদের গাড়ি আটকায়।
অভিযোগ, গাড়ি আটকে ওই রকম অনেকগুলি চকোলেটের প্যাকেট দেখে গ্রামবাসীদের সন্দেহ দৃঢ় হয়। তার পরেই সাইদুলদের মারধর করে জনতা। গাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ধার করতে গিয়ে আটক হয়ে যায় পুলিশও। গ্রামবাসীরা দাবি করেন, ওই দু’জনকে তাঁদের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে। শেষমেশ পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এই রকম একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে।