বাসা বসানো। কালনার স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।
পাখিদের বাসা কী ভাবে তৈরি হয়, তাই-ই হাতেকলমে পড়ুয়াদের শেখাল বিজ্ঞান মঞ্চের কালনা শাখা। শুক্রবার কালনা অম্বিকা মহিষমর্দিনী ইনস্টিটিউশনে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। একই সঙ্গে পড়ুয়াদের তৈরি বেশ কিছু পাখির বাসা স্কুল লাগোয়া গাছগুলিতে লাগানোও হয়েছে।
বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা জানান, নানা কারণে পাখিদের সংখ্যা কমছে। তাঁদের অভিযোগ, শহরে গাছের সংখ্যা কমা, বহুতল ও হাইমাস্ট আলোর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না পাখিরা। বিশেষত, রাতে থাকার জায়গা পাচ্ছে না পাখিরা। অন্য দিকে, গ্রামাঞ্চলে চাষের প্রয়োজনে ব্যবহার হচ্ছে দেদার কীটনাশক। ফলে গ্রামীণ এলাকাতেও পাখির সংখ্যা কমছে। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য তাপসকুমার কার্ফা, রামচন্দ্র নাগেরা জানান, কড়ি-বরগা দেওয়া ঘরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পাখিদের থাকার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। খড়ের চাল দেওয়া বাড়ি কমে যাওয়ায় পাখিরা বাসা তৈরির উপকরণও পাচ্ছে না। দেড় দশক আগেও গ্রাম ও শহরের বাড়ির অলিগলি, চিলেকোঠা-সহ নানা জায়গায় দেদার দেখা মিলত চড়াই পাখির। বর্তমানে চড়াইয়ের দেখা মেলাই ভার।
এই সব সমস্যাকে সামনে রেখেই এ দিন স্কুলের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা প্রথমে প্রোজেক্টর যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন পাখিদের চেনায়। এর পরে পিচ বোর্ড-সহ নানা জিনিস দিয়ে কী ভাবে পাখির বাসা তৈরি করা হয়, তা-ও দেখানো হয়। বেশ কিছু বাসা লাগোয়া কিছু গাছের উঁচু ডালে ঝোলানো হয়েছে। বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশুতোষ পাল বলেন, ‘‘বর্তমানে নানা কারণে পাখিদের প্রজননের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের কর্মসূচির ফলে পাখিদের সংখ্যা বাড়বে।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য জানান, স্কুলের তরফে পাখিদের জন্য আরও বেশ কিছু বাসা তৈরি করা হবে। বিজ্ঞান মঞ্চের এই কর্মসূচিতে খুশি পড়ুয়ারাও।