—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে মোট ৩১১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে তৃণমূলই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। চতুর্থ স্থানে রয়েছে কংগ্রেস।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টেয়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২০টি জেলা থেকে যে রিপোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশন পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে মোট মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ৮৫৮১৭টি। রাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি: ৫৬৩২১টি। তৃতীয় স্থানে সিপিএম-সহ বামেরা। তারা ৪৮৬৪৬টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
তবে, পশ্চিম বর্ধমানে উলট পুরাণ। জেলা পরিষদে মনোনয়নের নিরিখে সব থেকে এগিয়ে বিজেপি। বিজেপির হয়ে প্রার্থী হতে চেয়ে মোট আসনের থেকেও বেশি, ২৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ১৭২টি। এখানে বামেরা বিজেপির তুলনায় ২০টি বেশি মনোনয়ন দিয়েছে। একই ভাবে, পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপির তুলনায় সিপিএমের মনোনয়ন সংখ্যা ২০৬টি বেশি।
ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দাঁড় করানোর নিরিখে বিরোধীরা সবচেয়ে ভাল জায়গায় রয়েছে কাঁকসা ও অন্ডাল ব্লকে। এখানে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬৪টির মধ্যে সিপিএমের হয়ে ১৬৭ জন ও বিজেপির হয়ে ১৩৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি ও জেলা পরিষদের তিনটি আসনের মধ্যে সব ক’টিতেই মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে সিপিএম। বিজেপির ২৬ ও চার জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্ডালে ১৭০টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১৬০টিতে সিপিএম ও ১০৫টিতে বিজেপির লোকজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টির মধ্যে ২১টিতে, জেলা পরিষদের তিনটির মধ্যে দু’টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে সিপিএম। বিজেপির হয়ে যথাক্রমে ২৩ ও ৭ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
মনোনয়নপত্র জমার নিরিখে মূল চর্চা বিজেপির বদলে সিপিএম তথা বামেদের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা নিয়ে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “মানুষ বুঝতে পারছেন, আমরাই তৃণমূল ও বিজেপির একমাত্র বিকল্প। তা ছাড়া, সাংগঠনিক ভাবে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী। তাই এই পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।” যদিও, বিজেপির জেলা মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বিষয়টিকে আমল দিচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, “এটা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরিসংখ্যান। ভোটপ্রাপ্তির নয়। সাংগঠনিক ভাবে আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে চলি। সুতরাং, সিপিএমএখন আনন্দ করতেই পারে। ভোটের ফল অন্য রকম হবে।” এ দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় থেকে বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে’-রা অভিযোগ করেছেন, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই তাঁরা সব আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। যদিও, অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, “সন্ত্রাস হলে, বিরোধীরা এত সংখ্যক আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারতেন না। এ সবভিত্তিহীন কথা।”