প্রতীকী ছবি।
নির্দিষ্ট সময়ে ক্ষতিপূরণের টাকা না মেটানোয় দু’টি পৃথক মামলায় রাজ্য ও বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদকে (বিডিএ) ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করল আদালত। ওই টাকা মামলা চালানোর খরচ বাবদ জমির মালিককে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) আদালতে হাজির হচ্ছেন না দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বর্ধমান জেলা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (প্রথম) শেখ মহম্মদ রেজা। রাজ্য সরকার ও বিডিএ এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বাম আমলে বর্ধমানের গোদা, ইউসুফাবাদ ও কাটরাপোতা এলাকায় স্যাটেলাইট টাউনশিপ ও স্বাস্থ্য উপনগরী তৈরির জন্য কয়েকশো একর জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে অধিগৃহীত জমির দাম মেটায় রাজ্য। কৃষিজমির জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দেখে অসন্তুষ্ট হন জমির মালিকদের একাংশ। জমির বর্ধিত দামের জন্য অনেকে আদালতে মামলা করেন। বর্ধমান আদালতের আইনজীবী বিশ্বনাথ পাল জমির দাম বাবদ শতক প্রতি পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৮০০ টাকা। আদালতে মামলা করে জমির দাম শতক পিছু ৩৫ হাজার টাকা দাঁড়ায়। বিচারক ওই টাকা ৯০ দিনের মধ্যে মেটানোর নির্দেশ দেন।
ওই টাকা সরকার বা বিডিএ মেটায়নি বলে বিশ্বনাথবাবু ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। তার পরেও টাকা না মেলায় বিশ্বনাথবাবুর আইনজীবী রাজকুমার গুপ্ত সরকারি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাঁর মক্কেলের পাওনা টাকা মেটানোর জন্য আদালতের কাছে দাবি জানান। বিচারক অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) ও অতিরিক্ত জেলাশাসককে (ভূমি অধিগ্রহণ) সরকারি সম্পত্তির বিষয়ে আদালতকে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেন।
রাজকুমারবাবু জানান, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান, সরকারি সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে তিনি অবগত নন। জমি অধিগ্রহণ দফতরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কেও তিনি কিছু জানেন না। ওই হলফনামায় সন্তুষ্ট হননি বিচারক। তিনি ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গড়িমসি দেখে সম্প্রতি বিচারক রেজা জরিমানা করে মামলা চালানোর খরচ বাবদ ওই টাকা মালিকের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশে বিচারক জানিয়েছেন, প্রাপ্য টাকা আদায় করতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়ছেন জমির মালিকেরা। আদালত কড়া অবস্থান না নিলে জমির মালিকেরা নির্ধারিত মূল্য পাবেন না।
বর্ধমান আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী (জিপি) মুরারীমোহন কুমার বলেন, ‘‘রাজ্য এবং বিডিএ এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।’’