বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সভাপতির পদ সংরক্ষিত হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই থমকে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। কর্তাদের আশা, চলতি মাসেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। তার পরে সভাধিপতি নির্বাচন করে নতুন জেলা পরিষদ কাজ শুরু করবে। জেলা পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই সভাধিপতির পদে পছন্দের প্রার্থীকে বসাতে দলের নানা নেতা সক্রিয় হয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
বর্ধমান জেলা পূর্ব ও পশ্চিমে ভেঙে দু’টি জেলা গঠনের সিদ্ধান্তের পর থেকেই নতুন জেলা পরিষদ নিয়ে চাপান-উতোর চলেছে। গোড়ায় প্রশাসনের নানা সূত্রে জানা গিয়েছিল, জেলা পরিষদ এখনই না ভাঙার রাস্তায় হাঁটতে পারে সরকার। আপাতত হয়তো অবিভক্ত জেলা পরিষদই কাজ চালাবে। আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে তা ভাঙা হবে। কিন্তু সে নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়। দু’টি জেলায় কী ভাবে এক জেলা পরিষদ কাজ চালাবে, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা।
জেলা ভাগের সপ্তাহ দুয়েক পরেই অবশ্য জেলা পরিষদ ভাগের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ২১ এপ্রিল পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়, ৩৫ জন সদস্যকে নিয়ে নতুন জেলা পরিষদ গঠন হবে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নির্বাচিত ১৭ জন জেলা পরিষদ সদস্য। সভাধিপতি নির্বাচনে এই ১৭ জনই শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এ ছাড়া সদস্যের তালিকায় থাকবেন দুই মহকুমার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ৯ বিধায়ক ও বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাংসদ। আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক ও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রী হওয়ায় সদস্য হিসেবে থাকছেন না।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কিছু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া বাকি আছে। আশা করা হচ্ছে, মাসখানেকের মধ্যেই নতুন জেলা পরিষদ গঠন হয়ে যাবে।’’ প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সভাধিপতির পদ সংরক্ষিত হবে না কি অসংরক্ষিত থাকবে, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের মতামতের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে সভাধিপতির পদে পছন্দের পার্থী বসাতে তৃণমূলের নেতারা তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন বলে দলের নানা সূত্রের দাবি। প্রাথমিক ভাবে অবিভক্ত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি প্রিয়া সূত্রধর, পূর্ত কর্মাধক্ষ্য উত্তম চক্রবর্তী ও কৃষি কর্মাধক্ষ্য নরেন চক্রবর্তী এই দৌ়ড়ে রয়েছেন বলে শাসকদলের নানা সূত্রের খবর।
তবে দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এক বছর পরেই পঞ্চায়েত ভোট। নিরপেক্ষ ভাবে বিবেচনা করেই এই পদে মনোনয়ন করা হবে।’’ ১০ মে-র পরে কলকাতা থেকে সভাধিপতির চূড়ান্ত নাম জানানো হবে বলে জানান তিনি।