সুবীরকুমার দে। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে বেশিরভাগ প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। অপুষ্টি, অভাব তাঁদের নিত্যসঙ্গী। তাদের পড়াশোনায় উৎসাহী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বর্ধমানের প্রান্তে কেশবগঞ্জচটি এলাকার আদর্শ বিদ্যালয়। কর্মকাণ্ডের কারিগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবীরকুমার দে। দশ বছর ওই স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। একাধিক সম্মান পেয়েছে স্কুল। স্কুলকে নিয়ে একাধিক স্বকীয় প্রকল্প ও সামাজিক নানা কাজের জন্য এ বার শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন তিনি।
জেলা স্কুল পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, ‘‘আমাদের জেলা থেকে বেশ কয়েকটি নাম পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে ওঁর নাম বিবেচিত হয়েছে। আমরা গর্বিত। এই পুরস্কার সকলকে অনুপ্রাণিত করবে।’’
স্কুল সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্কুল ভবন পড়াশোনার নানা উপাদানে সাজিয়েছেন তিনি। আধুনিক কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, জল পুনর্ব্যবহারের প্রকল্প, স্কুলের ছাদে আনাজ বাগান, পাখিদের জায়গা, ঔষধি গাছ লাগানো, ডিজিটাল গ্রন্থাগার গড়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে ‘আদর্শ গ্রুপ’ তৈরি করে দুঃস্থ এলাকায় সচেতনতা প্রচার, স্বাস্থ্যবিধি বোঝানো, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের স্কুলের ছাদ বাগানের আনাজ দেওয়ার কাজ করেছে ওই স্কুল। সুবীরবাবুর আমলেই স্বচ্ছ বিদ্যালয় হিসেবে জাতীয় পুরস্কার, যামিনী রায় পুরস্কার, শিশুমিত্র পুরস্কার, নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারও পেয়েছে ওই স্কুল। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের তরফে ‘টিচার লার্নিং মেটিরিয়াল পুরস্কার’, সেরা প্রধান শিক্ষকের সম্মানও পেয়েছেন মঙ্গলকোট থানার বাবলাডিহি গ্রামের বাসিন্দা ওই শিক্ষক।
তিনি জানান, স্নাতক হওয়ার পরে স্বাস্থ্য দফতরে বছর চারেক চাকরি করেছেন তিনি। তারপরে স্কুল সার্ভিস কমিশনে উত্তীর্ণ হয়ে রায়না থানার বোড় বলরাম লালবিহারী বিদ্যমন্দিরে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন এই স্কুলে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘স্কুলের সাফল্য এবং ব্যক্তিগত বিভিন্ন শিক্ষামূলক, সামাজিক কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হয় এই পুরস্কারের ক্ষেত্রে। সেগুলি জমা করার পরে শনিবার রাতে খবর পাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের সমস্ত ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক এবং বর্ধমান শহর জুড়ে থাকা বিভিন্ন মানুষের সাহায্যে এই সম্মান এসেছে।’’